আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া কথিত মডেলদের সঙ্গে সমাজের বিশিষ্টজনের নাম জড়িয়ে একটি চক্র চাঁদাবাজি করছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
নিজ কার্যালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম। স্পষ্ট জানিয়ে দেন সম্প্রতি অভিযানে গ্রপ্তার হওয়া অভিনেত্রী, মডেলদের বাসায় যাতায়াতকারীদের কোনো তালিকা করেনি পুলিশ।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া চিত্রনায়িকা পরীমনি, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌয়ের বাসায় যাতায়াতকারী কারও তালিকা পুলিশ করেনি। তবে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে একটি চক্র এ রকম তালিকা করে চাঁদাবাজি করছে। সেই চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে কয়েকজন ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।’
পুলিশের এই ঊধ্বর্তন কর্মকর্তার মতে, যে কারও সঙ্গে যে কারও সম্পর্ক থাকতেই পারে। সম্পর্ক থাকা কোনো বেআইনি বিষয় নয়। একজনের অর্থসম্পদ থাকলে কাউকে গিফটও করতে পারেন। কাউকে কিছু উপহার দেয়াও বেআইনি নয়। যতক্ষণ না কোনো পক্ষ থেকে মামলা হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
ডিএমপি কমিশনারের দাবি, মডেল ইস্যুতে সম্পর্ক রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তালিকার কথা বলে একটি চক্র চাঁদাবাজিতে নেমেছে। চক্রটি সমাজের বিশিষ্টজনদের কাছে ফোন করে তালিকায় তাদের নাম থাকার কথা বলে চাঁদা দাবি করছে। এখন পর্যন্ত তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এই ধরনের চাঁদাবাজির শিকার হওয়ার কথা পুলিশকে জানিয়েছেন। তারা ফোন করে জানিয়েছেন- তারা আতঙ্কিত। এমনকি একজন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা চেয়ে চিঠি দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। চাঁদা না দিলে গণমাধ্যমে তার নাম প্রকাশ করার হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, চক্রটি কথিত ভিডিওর কথা বলে বিশিষ্টজনদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে। এমন তালিকার কথা বলে যারা বাণিজ্যে নেমেছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মডেল-অভিনেত্রীদের গ্রেপ্তারের পর ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আমরা চাই না করোনাকালে এমন আতঙ্ক ছড়াক এবং বিনা কারণে কারও সম্মানহানি ঘটুক। কেউ যাতে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার না হন সে জন্য সকল সাংবাদিককে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।’
ডিএমপি কমিশনারের অনুরোধ, যদি ব্যবসায়ী মহলের কারও কাছে বা সমাজের কোনো নাগরিকের কাছে এমন তালিকার কথা বলে চাঁদা চেয়ে কেউ ফোন করে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে যাতে তারা বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়। অডিও বা ভিডিও থাকলে তা যেন তদন্তের স্বার্থে সংরক্ষণ করে রাখেন।
কথিত মডেল, অভিনেত্রীদের বিরুদ্ধে হঠাৎ কেন এমন অভিযান, এমন প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল গুলশান, বনানীসহ অভিজাত এলাকায় একটি চক্র অশুভ কাজে জড়িত। তারা অতিরঞ্জিত কিছু করছিল। সমাজের স্বার্থে এই চক্রটিকে একটু ধাক্কা দেয়ার দরকার ছিল। শালীনতা বজায় রেখে নিজের বাসায় যদি কেউ পার্টির আয়োজন করে, নাচগান করে এটা তো অন্যায় না। তবে পার্টির আড়ালে যদি অন্য কোনো ঘটনা ঘটে সেটা খারাপ।’