রিমান্ডে মডেল পিয়াসা ও অভিনেত্রী পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অনেকের নাম উঠে আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা বলছে, পৃষ্ঠপোষকের মধ্যে রয়েছেন সমাজের বিভিন্ন সেক্টরের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। তাদের তালিকা করা হচ্ছে।
মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে রোববার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, ‘আসামিরা আমাদের হেফাজতে আসার পর থেকে আমরা ধারাবাহিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে যাচ্ছি। তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন। তবে সেগুলো তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা যাবে না। আমরা তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করছি।
‘পরীমনি পিয়াসাদের সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের যোগাযোগ ও সম্পৃক্ততার কথা আমরা জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারছি। এদের মধ্যে বিত্তশালী ও পদস্থ ব্যক্তিদেরও নাম পাচ্ছি আমরা। কিন্তু যাচাই বাছাই না করে এসব নাম আমরা গণমাধ্যমে বলতে পারব না। কারণ এতে অনেক নিরীহ মানুষও ফেঁসে যেতে পারেন।’
পরীমনির সঙ্গে ব্যাংকের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সখ্যতা নিয়ে এরই মধ্যে প্রতিবেদন ছেপেছে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন পেশার অনেকেরই নাম পাচ্ছি কিন্তু সেগুলো এখনই বলা যাবেনা। আমরা একটা বিষয় খুব গুরুত্ব সহকারে মাথায় রেখে তদন্ত কাজ চালাচ্ছি, সেটি হলো যেহেতু অনেকগুলো মামলা এবং অনেক তথ্যের ছড়াছড়ি সেজন্য অনেক নিরপরাধ মানুষ ফেঁসে যেতে পারেন। সেটি যেন না হয় সেজন্য আমরা কোনো ধরনের তাড়াহুড়া করছিনা। ধারাবাহিকভাবে আমরা তদন্ত কাজ এগিয়ে নেবো।’
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, ‘আমরা চাই না অযথা শুধুমাত্র একটি নাম বলে দিয়ে কাউকে হয়রানি করা হোক। আমরা দেখছি কিছু গণমাধ্যম বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ করে সংবাদ প্রচার করছে। এমনকি আজও একটি স্বনামধন্য দৈনিক পত্রিকা সিআইডির রেফারেন্স দিয়ে কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেছে। আমরা নিশ্চিত করে বলতে চাই সিআইডির কোনো কর্মকর্তা এসব তথ্য দেননি। এভাবে খবর প্রকাশ করা খুবই দুঃখজনক।’
পরীমনি পিয়াসাদের ব্ল্যাক মেইলিংয়ের শিকার এমন কোনো ভিকটিম অভিযোগ করেছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ওমর ফারুক জানান, এখন পর্যন্ত কোনো ভিকটিম অভিযোগ করেননি। তবে কিছু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সে অনুযায়ী তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিদের ধারাবাহিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও তথ্যের প্রয়োজন হলে আসামিদের আবার রিমান্ডে নেয়া হবে।
ওমর ফারুক আরও বলেন, ‘মামলাগুলোর দায়িত্ব পাওয়ার পর ছয়জন আসামির বাসায় আমরা তল্লাশি চালিয়েছি। তল্লাশি চালিয়ে আমরা কিছু আলামত কিছু ডিভাইস উদ্ধার করেছি। আমরা কয়েকটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ কম্পিউটার পাসপোর্টসহ ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করেছি।
‘সেইসঙ্গে পুলিশের হেফাজতে থাকা একটি ফেরারি গাড়ি আমরা নিয়ে এসেছি, যেটা মিশু হাসানের কাছ থেকে র্যাব জব্দ করেছিল। তদন্তের অংশ হিসেবে আমরা আসামিদের বাসায় এই তল্লাশি অভিযান চালিয়েছি। আরও কোনো আলামত পাওয়া যায় কিনা সে চেষ্টাই আমাদের ছিল। আমরা প্রতিটি বাসা থেকেই কম বেশি অনেক আলামত জব্দ করেছি, যেটি তদন্তের স্বার্থে এখনই বলা যাবে না।’