মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বনানী থানায় করা মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ করিম জিমিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আব্দুস ছোবাহান শনিবার এ আবেদন করেন।
বেলা ৩টার দিকে ঢাকার মহানগর হাকিম মাসুদ-উর-রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানি হবে।
গুলশানের একটি বাসা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় জিমিকে আটক করে ডিবি। ওই সময় তার কাছ থেকে ২২৫টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগে জিমির বিরুদ্ধে বনানী থানায় ডিবি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি করে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া শনিবার সকালে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জিমির বিরুদ্ধে করা মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্ত করবে। তাকে আজকেই আদালতে পাঠানো হবে।’
ঢাকা বোট ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গী ছিলেন জিমি। তাকে শুক্রবার আটক করে ডিবি।
আটকের পর রাতে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, জিমির বিরুদ্ধে মাদক মামলা করে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
জিমির কাছ থেকে কোনো মাদক উদ্ধার হয়েছে কি না সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
হারুন বলেন, ‘সমসাময়িক ঘটনার পর থেকে জিমির বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছিলাম। সম্প্রতি দুটি ক্লাবের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, হাফ প্যান্ট পরে একটি ছেলে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছে; পরীমনির সঙ্গে ভাঙচুর করেছে।
‘সেই জিমিকে আমরা আটক করেছি। তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’
গুলশানের একটি শুটিং স্পট থেকে জিমিকে আটক করা হয় বলে তার পরিবারের এক সদস্য নিউজবাংলাকে জানান। পরে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
কস্টিউম ডিজাইনার জিমি কাজ করেন বিজ্ঞাপন ও সিনেমায়। কয়েক বছর ধরে তিনি স্থায়ীভাবে কাজ করছেন পরীমনির সঙ্গে। সুযোগ পেলে অন্য প্রোডাকশনেও কাজ করেন।
সম্প্রতি একটি টেলিফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের সেটে দেখা গেছে তাকে।
অনলাইনভিত্তিক একটি পোশাক বিক্রির প্ল্যাটফর্ম আছে জিমির। এর নাম জিমি’স সিগনেচার।
জিমি তার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন চট্টগ্রাম থেকে। স্নাতক বিষয়ে পড়েছেন সান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার বাড়ি কুমিল্লাতে।
জিমিকে আটকের আগে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকে আটক করে গোয়েন্দাদের একটি দল। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
চিত্রনায়িকা পরীমনির পৃষ্ঠপোষক এক নারী নজরদারিতে—গোয়েন্দা পুলিশের কাছ থেকে এমন বক্তব্য আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নির্মাতা চয়নিকাকে আটক করা হয়।
চয়নিকা শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরের সোনারগাঁও রোডে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে গিয়েছিলেন এক অনুষ্ঠানে। আর সে ভবনের নিচে অবস্থান নিয়ে থাকেন পুলিশ সদস্যরা।
অনুষ্ঠান শেষে বের হলে চয়নিকার গাড়ি ঘিরে ফেলেন গোয়েন্দারা। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
গত বুধবার পরীমনি আটক হওয়ার পর তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আরও তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
আটকের পরের দিন বৃহস্পতিবার পরীমনির নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় তাকে চার দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।