বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিনহা হত্যার এক বছর: বিচার কার্যক্রমে করোনার ছায়া

  •    
  • ৩১ জুলাই, ২০২১ ১৪:০৭

লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ করতে দেরি হচ্ছে বলে জানালেন সিনহা হত্যা মামলার আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা। তিনি বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলেই রায়ের দিকে যাবে আদালত। এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জন নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হত্যার বছর পূর্ণ হলেও করোনাভাইরাস সংকটের কারণে এগুচ্ছে না বিচার কার্যক্রম।

গত বছরের ৩১ জুলাই টেকনাফ থানার শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে খুন হন সিনহা। ঘটনাটি সারা দেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

এই হত্যা মামলায় র‌্যাবের দেয়া অভিযোগপত্র কক্সবাজার জেলা আদালত গ্রহণ করে গত ২১ ডিসেম্বর। এরপর থেকে করোনার কারণে দফায় দফায় কঠোর বিধিনিষেধ, লকডাউন বা শাটডাউনের কারণে আরও অনেক মামলার মতো এই মামলার বিচারকাজও স্থবির হয়ে পড়েছে।

লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ করতে দেরি হচ্ছে বলে জানালেন সিনহা হত্যা মামলার আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা।

তিনি বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলেই রায়ের দিকে যাবে আদালত। এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জন নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের সাক্ষ্যগ্রহণ এখনও হয়নি।

মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা ভ্রমণ বিষয়ে ভিডিও তৈরির জন্য কক্সবাজার গেলেও সেখানে গিয়ে মাদক পাচার বিষয়ে কাজ করেন। আর তখন এর সঙ্গে ওসি প্রদীপের সম্পৃক্ততার তথ্য পান। আর এ নিয়ে তিনি প্রদীপের সাক্ষাৎকার নিতে যান। তখনই প্রদীপ তাকে হুমকি দেন। হুমকি উপেক্ষা করে সিনহা তার কাজ চালিয়ে গেলে, তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

গত ১৩ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরার সময় র‌্যাবের মুখপাত্র আশিক বিল্লাহ বলেছিলেন, ‘প্রদীপ ভেবেছিল হুমকি দিলে সিনহা কক্সবাজার ত্যাগ করবে। কিন্তু কক্সবাজার ত্যাগ না করায় হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে এমনটিই পেয়েছেন।

‘এ মামলার তদন্তের মূল বিষয় হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।…প্রদীপের স্বেচ্ছাচারিতা ও ইয়াবা বাণিজ্যের বিষয়টি সিনহা জেনে যাওয়ায় এই ঘটনা।’

মেজর সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার সে সময়ের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। ফাইল ছবি

গত বছরের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান।

শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সিনহা তল্লাশি চৌকিতে বাধা দেন। আর তিনি পিস্তল বের করলে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।

তবে পুলিশের বক্তব্য নিয়ে সে সময় প্রশ্ন উঠে। আর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস মামলা করেন ৯ জনের বিরুদ্ধে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয় দুই নম্বর আসামি। মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে।

এরপর অভিযুক্ত ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে র‌্যাব স্থানীয় তিনজন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। মামলার আসামির সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয় ১৫ জন।

শুরুর দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি দল ঘটনাটি তদন্ত করে। যদিও সে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের ফোরাম রাওয়া উচ্চকিত হয়। আর তদন্তের ভার দেয়া হয় র‌্যাবকে।

সিনহা হত্যার দুই মাস পর কক্সবাজারের পুরো পুলিশ প্রশাসনকে পাল্টে দেয়া হয়, যা দেশের ইতিহাসে প্রথম।

গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে যোগদান করতে শুরু করে পুলিশের নতুন সেটের সদস্যরা। পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে একে একে যোগদান করতে থাকে ৮ থানার নতুন ওসি, ৩৪ পুলিশ পরিদর্শকসহ অন্তত দেড় হাজার পুলিশ সদস্য। সে থেকে স্বাভাবিক হতে শুরু করে কক্সবাজারের পুলিশি কার্যক্রম।

পুলিশের নতুন সেটের সদস্যরা দায়িত্ব নিয়েই নেমে পড়ে মাদকবিরোধী অভিযানে। এলাকাভিত্তিক পুলিশের কার্যক্রম কমিউনিটি পুলিশিংকে পরিবর্তন করে আনা হয় বিট পুলিশিং।

দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ইয়াবা চালান ১৭ লাখ ৭৫ হাজার পিস উদ্ধার করে মাদকবিরোধী অভিযানে কঠোরতার জানান দেয় নতুনরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথ্যমতে, ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২২ জুলাই পর্যন্ত জেলায় ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ১৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯২ হাজার ১২৯ পিস। মাদক উদ্ধারে মামলা হয়েছে ১ হাজার ৬৩৮টি। এসব মামলায় আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ২০৫ জনকে।

এ বিভাগের আরো খবর