নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া আগুনের সূত্রপাত গরমে বিদ্যুতের তার গলে হয়েছিল বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সংস্থাটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন বুধবার বিকেলে এ কথা জানান।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, কারখানার নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। পাশাপাশি দুটি ভবনের এগজস্ট ফ্যান মুখোমুখি থাকায় নিচতলা বেশ গরম হয়ে উঠেছিল। এই গরমে বিদ্যুতের তার গলে আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের তদন্তে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেবো।’
গত ৮ জুলাই রাতে হাশেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরের দিন উদ্ধার করা হয় ৪৯ জনের মরদেহ। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জনে।
বেশির ভাগের মরদেহই পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্তের জন্য স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ৮ তারিখ আগুন লাগলেও ৯ তারিখ রাতের আগে পুরোপুরি আগুন নেভানো যায়নি।
আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ মনে করা হয় কারখানার প্রতি ফ্লোরে মজুত করা দাহ্য পদার্থ। ছিল বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক, যা আগুন আরও ছড়িয়ে যেতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
মালিকপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই এই আগুনের সূচনা। তবে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার পেছনে কারখানা কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা দায়ী বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সংস্থা।
এ ঘটনায় পুলিশ কারখানার মালিক আবুল হাশেম, তার চার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। রিমান্ড শেষে হাশেম ও তার চার ছেলেকে জামিন দিয়েছে আদালত।
আগুনের ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর তদন্ত কমিটি করে। ফায়ার ছাড়া অন্য তিন প্রতিষ্ঠানের কেউই প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বাড়িয়েছে তারা।
ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ভবন নির্মাণের আগে ফায়ার সার্ভিস থেকে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিয়ে নকশার অনুমোদন নিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।