বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সন্তানকে দেখার ভাগ্যও হলো না হৃদয়ের

  •    
  • ২৬ জুলাই, ২০২১ ২২:২৮

নিহত হৃদয়ের মা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমার ছেলে মারা যাওয়ার দুই দিন পরেই আমার নাতি জন্মগ্রহণ করে। সন্তানকে দেখার ভাগ্য আমার ছেলের হলো না। তাকে মেরেই ফেলল চাঁদাবাজরা।’

ঈদের আগের সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বগুড়া সদরের কৈপাড়ার এলাকার বাসিন্দা রকিবুল হাসান হৃদয়। এর দুই দিন পর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তার স্ত্রী। সন্তানের মুখ দেখার আগেই খুনের শিকার হলেন হৃদয় এমন আহাজারি তার মা আয়েশা সিদ্দিকার।

বললেন, ‘আমার ছেলে মারা যাওয়ার দুইদিন পরেই আমার নাতি জন্মগ্রহণ করে। সন্তানকে (নাতি) দেখার ভাগ্য আমার ছেলের হলো না। তাকে মেরেই ফেলল চাঁদাবাজরা।’

চাঁদা না দেয়ায় বাবা-ছেলেকে ছুরিকাঘাতের পর ছেলে হৃদয়ের নিহত হওয়ার ঘটনায় বিচার চেয়ে সোমবার বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তার পরিবারের সদস্যরা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হৃদয়ের মা আয়েশা সিদ্দিকা।

তিনি বলেন, ‘কৈপাড়া এলাকায় আমাদের নিজস্ব তিনতলা বাড়ির নিচতলায় একটি মুদির দোকান রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দোকানে বসে ছিল আমার ছেলে রকিবুল হাসান হৃদয়। ওই সময় কয়েকজন নেশাগ্রস্থ ছেলে অটোরিকশায় করে আমাদের দোকানের সামনে এসে নামে। তারা অটোরিকশা থেকে নেমেই দোকানে বসে থাকা হৃদয়ের কাছে ঈদের চাঁদা দাবি করে।

‘এসময় হৃদয় তাদের চাঁদা দিতে অসম্মতি জানায়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানের ভেতরে ঢুকে লুটপাটের চেষ্টা চালায়। ওই সময় হৃদয় চিৎকার করে উঠে।’

হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে হৃদয়ের পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘হৃদয়ের চিৎকার শুনে তার বাবা দোকানের দিকে যান। একপর্যায়ে বাবার সামনেই হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করে চাঁদাবাজরা। হৃদয়কে বাঁচাতে তার বাবা এগিয়ে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন বুধবার রাতে হৃদয় মারা যায়। তার বাবা আশঙ্কাজক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।’

নিহত হৃদয়ের বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস মীম বলেন, ‘চাঁদা না দেয়ায় আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। বাবা ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।’

মীম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ভাইয়ার জানাজা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়ার গরীব শাহ্ ক্লিনিকে আমার ভাইয়া-ভাবির প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আসে, যাকে দেখার ভাগ্য আমার ভাইয়ার হলো না।’

মীম আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমরা পরিবারের সবাই আতঙ্কিত অবস্থায় আছি এবং প্রচণ্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দুজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব পুলিশের। তাদের কোনো সমস্যা হবে না। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

খুনের ঘটনায় হৃদয়ের মা বুধবার রাতেই বগুড়া সদর থানায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে মতিন ও শরিফ নামে দুজনকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে অন্যদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি সংস্থাটি।

এ বিভাগের আরো খবর