বগুড়ায় এক যুবক হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করার পর থেকে পরিবারের লোকজনকে নানা রকম হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে রোববার এই অভিযোগ করেন নিহতের বোন বগুড়ার নারুলি এলাকার বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস মিম।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই পরিবারের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া শহরের কৈগাড়িতে সিগারেট বাকিতে কেনা নিয়ে বিবাদের জেরে মামুনুর রশিদ ও তার ছেলে রাকিব হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করা হয়।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে রাকিবের মৃত্যু হয়। এখনও এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার বাবা।
এ ঘটনায় হৃদয়ের মা বুধবার বগুড়া সদর থানায় পাঁচজনের নামে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে।
নারুলি ফাঁড়ির পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় মতিন ও শরিফ নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার ফেসবুক স্ট্যাটাসে রাকিবের বোন মিম লেখেন, ‘ভাইয়া আমাদের বাসার নিচতলায় দোকান চালায়। আমার বাবাও মাঝে মাঝে বসে।…গত ২০ জুলাই ঈদুল আজহার আগেরদিন কিছু ছেলে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ভাইয়ার দোকানে এসে ইচ্ছাকৃতভাবে ওর সঙ্গে ঝামেলা শুরু করে। এ সময় ভাইয়া একা ছিল।
‘চিল্লাচিল্লি শুনে আমার বাবা, মা, কাকা-কাকি তিনতলা থেকে নেমে আসেন। ছেলেগুলো তখন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ভাইয়া ও বাবার গায়ে হাত তোলে। হাতাহাতির একপর্যায়ে তারা ভাইয়া ও বাবাকে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে দৌড়ে পালায়।’
মিম আরও লেখেন, ‘২২ জুলাই বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ভাইয়ার জানাজা হয়। ২৩ জুলাই বিকেল ছয়টার দিকে আমার ভাইয়া-ভাবির প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আসে, যাকে দেখার ভাগ্য আমার ভাইয়ার হলো না।
‘আমার বাবা এখনও হসপিটালের বিছানায়। মুহূর্তে মুহূর্তে কন্ডিশন চেঞ্জ হয়। ডাক্তাররা শিওর করে কিছুই বলতে পারে না। তিনি ক্রিটিক্যাল পেশেন্ট। তার হার্টের প্রবলেম, ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেশার আছে।’
স্ট্যাটাসের শেষের দিকে মিম লেখেন, ‘বাবা আর ভাইয়ার পর আমি বড়। তাই স্বভাবতই আমার ওপর সব দায় বর্তায়। কিন্তু এর সঙ্গে যোগ হইছে আসামি পক্ষের বিভিন্ন হুমকি ও হয়রানি। আমি, আমার মা, ছোট বোন, ভাবি ও সদ্য ভূমিষ্ঠ ভাতিজা প্রচণ্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ বিষয়ে তার মা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে আসামিপক্ষের লোকজন। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এর বেশি এখন কিছু বলতে পারব না।’
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ জানান, ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ খুবই তৎপর। তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। কোনো সমস্যা হবে না। আহত মামুনুর রশিদকেও পুলিশ দেখভাল করছে।
তিনি আরও জানান, সন্ত্রাসী যারাই হোক ছাড় পাওয়ার কোনো উপায় নেই। তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।