কঠোর শাটডাউনে কারখানা খোলা রাখায় মুন্সিগঞ্জে অবস্থিত প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই সঙ্গে কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) নজরুল ইসলামকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
জেলা সদরের চরমুক্তারপুর এলাকার ওই কারখানা ১৩ দিনের জন্য সিলগালা করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুর রহমান শুক্রবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় এই দণ্ড দেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) শিলু রায় নিউজবাংলাকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
শাটডাউনের নির্দেশ না মেনে শুক্রবার খোলা ছিল এই কারখানা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, ১৯ জুলাই ফ্যাক্টরির প্রশাসনিক কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে জানানো হয়, ২৩ জুলাই সকাল ৬টার মধ্যে অবশ্যই সবাইকে কর্মস্থলে থাকতে হবে। নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়।
ওই নোটিশের কপি নিউজবাংলার প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তাতে শ্রমিকদের ঈদের ছুটি কাটিয়ে ২৩ জুলাই সকাল ৬টার মধ্যে কাজে ফিরতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথা তাদের বিরুদ্ধে কোম্পানি কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
এ অবস্থায় শুক্রবার সকালে কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। সাড়ে ১০টার দিকে খবর আসে, এক শ্রমিক হঠাৎ ক্লিংকারের বেল্টের ওপর পড়ে মারা গেছেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে ওই ফ্যাক্টরিতে যান সাংবাদিকরা। তবে কাউকে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়নি। এতে কর্তৃপক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কেউ ফোনেও সাড়া দেয়নি।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা সংবাদ পেয়ে প্রিমিয়ার সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে যাই এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। তবে তারা মৃত ব্যক্তির বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা এখনও জানায়নি। মরদেহের ময়নাতদন্তের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’
শাটডাউনের ভেতরে কীভাবে ফ্যাক্টরি চলছিল, এ প্রশ্ন করা হলে সে সময় কোনো উত্তর দেননি ওসি।
এডিএম শিলু রায় বলেন, শ্রমিকের মৃত্যুর পর বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে অভিযান চালায়। মুক্তারপুর এলাকায় যেসব কারখানা এখনও চলমান, তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
নিহত শ্রমিকের নাম মো. শাহাবুল। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম শিবরামপুরে।