নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের করা মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে শনিবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আজ কারখানাটিতে প্রাথমিক তদন্ত করেছি ও বিভিন্ন আলামত পেয়েছি। ঘটনার সময়কার সাক্ষীদের সাক্ষ্য পেয়েছি। আজ থেকে মূল তদন্ত শুরু। পুলিশের করা মামলার ১০টি বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগুন লাগার মূল কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এর সঙ্গে সেখানে কী কী ধরনের সমস্যা ছিল তাও বেরিয়ে আসবে।’
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসসহ চারটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। সবার তদন্তের সঙ্গে সিআইডির ফলাফল মিলে যাবে বলে ধারণা করছেন ডিআইজি।
তদন্তে আরও কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ডিআইজি।
তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ আছে যত দ্রুত সম্ভব মামলার তদন্ত শেষ করার জন্য। তাই তারা দ্রুত তদন্ত শেষ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
গত ৮ জুলাই রাতে হাশেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরের দিন উদ্ধার করা হয় ৪৯ জনের মরদেহ। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জনে।
বেশির ভাগের মরদেহই পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্তের জন্য স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ৮ তারিখ আগুন লাগলেও ৯ তারিখ রাতের আগে পুরোপুরি আগুন নেভানো যায়নি।
আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ মনে করা হচ্ছে কারখানার প্রতি ফ্লোরে মজুত করা দাহ্য পদার্থ। ছিল বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক, যা আগুন আরও ছড়িয়ে যেতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
মালিকপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই এই আগুনের সূচনা। তবে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার পেছনে কারখানা কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা দায়ী বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সংস্থা।
এ ঘটনায় পুলিশ কারখানার মালিক আবুল হাসেম, তার চার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। তাদের চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গত বুধবার তাদের আদালতে হাজির করা হলে কারখানার মালিক আবুল হাসেমসহ ছয়জনকে কারাগারে পাঠানো হয়। হাসেমের দুই ছেলেকে জামিন দিয়েছে আদালত।