নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সজিব গ্রুপের কারখানা হাশেম ফুডসের ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে কিছু লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে কারখানাটিতে আগুন লাগার পর শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরের দিন উদ্ধার করা হয় ৪৯ জনের মরদেহ। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে।
বেশির ভাগ মরদেহ পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। এমন ৪৮টি মরদেহ নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে জায়গা না হওয়ায় মরদেহগুলোর মধ্যে ১৫টি নিয়ে যাওয়া হয়েছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে। আটটি মরদেহ আছে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের মর্গে। ২৫টি আছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে।
পুড়ে যাওয়া মরদেহগুলোর পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা চলছে ঢাকা মেডিক্যালে। শনিবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ৩৬ মরদেহের বিপরীতে ৫০ জন স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির সহকারী ডিএনএ অ্যানালিস্ট নুসরাত ইয়াসমিন।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গের সামনে বুথ বসিয়ে নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করা হয়৷ রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে এ কার্যক্রম। শনিবার সকাল ৮টা থেকে ফের নেয়া হয় স্বজনদের নমুনা।
প্রতিটি মরদেহের স্বজন না আসা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে কিনা জানতে চাইলে নুসরাত ইয়াসমিন বলেন, ‘বিষয়টি সে রকম নয়। চকবাজারের ঘটনায় আমরা এখানে প্রথম তিন দিন ছিলাম। পরে আমাদের ফোন নম্বর দিয়ে রেখে হেডকোয়ার্টারের ল্যাবে চলে গিয়েছি৷ তবে এটির বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি৷ আজকে সারা দিন আছি। হয়তো আগামীকালও থাকব।’
মরদেহগুলোর নমুনা সংগ্রহ নিয়ে নুসরাত, ‘গতকালই ডাক্তারদের সঙ্গে ডিএনএ এক্সপার্টরা উপস্থিত থেকে মরদেহগুলোর নমুনা নেয়া সম্পন্ন করেছেন৷ এরপর আর মরদেহ আসেনি৷ ফায়ার ব্রিগেড অভিযান শেষ ঘোষণা না করার আগে যদি নতুন কোনো মরদেহ আসে, তাহলে আমরা আবারও নমুনা সংগ্রহ করব।’
এই ডিএনএ অ্যানালিস্ট জানান, নমুনা সংগ্রহ এবং ডিএনএ টেস্টের বিষয়ের রেজাল্ট দিতে সর্বনিম্ন একুশ দিন প্রয়োজন৷ এর আগ পর্যন্ত সাধারণত কিছু বলা যায় না।
নিহতদের শনাক্তে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে স্বজনদের ডিএনএ নমুনালাশ শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত মরদেহ মর্গে থাকবে কি না, জানতে চাইলে নুসরাত বলেন, ‘এটি আমাদের বিষয় না। প্রশাসন এবং ডাক্তারদের সমন্বয়ের বিষয়। তারাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
মরদেহের বিপরীতে নমুনা সংগ্রহ বেশি কেন, জানতে চাইলে ডিএনএ পরীক্ষক মাসুদ রাব্বী জানান, এটি আসলে সে রকম কিছু না। একটি ডেড বডির বিপরীতে তার মা ও বাবা দিয়ে গেল৷ অথবা শুধু মা বা ভাই দিয়েছে। এ জন্য এই সংখ্যাটা পরিবর্তন হবে। কনস্ট্যান্ট থাকবে না।