রূপগঞ্জে হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অর্ধশতাধিক প্রাণহানির ঘটনায় কারখানা মালিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ।
শনিবার দুপুর সোয়া একটার দিকে অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া কারখানা পরিদর্শনে এসে এ কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। মামলা করা হবে।
‘প্রাথমিকভাবে আমরা যা দেখেছি তাতে একটি কারখানা যে স্ট্যান্ডার্ডে পরিচালিত হওয়ার কথা ছিল এখানে তা হয়নি, পর্যাপ্ত সিঁড়ি ছিল না, যা দিয়ে শ্রমিকরা নামতে পারত। এসব বিষয় আমরা দেখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে কারখানাটিতে আগুন লাগার পর শুরুতে তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরের দিন উদ্ধার করা হয় ৪৯ জনের মরদেহ। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে। বেশির ভাগের মরদেহই পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। পরিচয় শনাক্তের জন্য চলছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও এখনও পুরোপুরি নেভেনি। ভবনের সবকটি ফ্লোর এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তীব্র ধোঁয়া এবং তাপ বের হচ্ছে। আছে উৎকট ঝাঁঝাল গন্ধ। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি ছিটিয়ে ধোঁয়া নিবারণ এবং আবারও যাতে আগুন না লাগে সে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জানালেন, দুপুর ২টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালেরও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে।
যেভাবে প্রাণহানি
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার ভুলতার কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুড বেভারেজ কোম্পানির কার্টন কারখানায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে।
কারখানার বেঁচে যাওয়া শ্রমিক কিশোর ফাতেমা জানিয়েছে, সে তিন তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে। আর চতুর্থ তলায় তালা দিয়ে রাখার কারণে অন্যরা বাঁচতে পারেনি।
ফায়ার সার্ভিসের ভাষ্য তার এই বক্তব্যকে সমর্থন করে। বাহিনীটি জানায়, চারতলার সিঁড়ির মুখ থেকে ৪০টির বেশি মরদেহ উদ্ধার হয়।
শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেজান জুস কারখানার সাততলা ভবনটির নিচতলায় কার্টন ফ্যাক্টরি থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুনের লেলিহান শিখা এক পর্যায়ে পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের প্রতিটি তলার সিঁড়ির গেট তালাবদ্ধ থাকায় অনেকে বের হতে পারেননি।