বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘নিখোঁজ’ সাব্বিরই নব্য জেএমবির সামরিক শাখার আঞ্চলিক কমান্ডার

  •    
  • ৮ জুলাই, ২০২১ ২২:১৬

সিটিটিসির কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে জানান, সাব্বিরের চারটি সাংগঠনিক (কুনিয়া) নাম রয়েছে। এগুলো হচ্ছে বামছি ব্যারেক ওরফে মেজর বামছি ওরফে আবু হাফস আল বাঙ্গালী ওরফে জন ডেভিড। জামালপুরে তার বাড়ি। ২০১৬ সালে অনলাইনে ‘দাওয়াত’ পেয়ে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন তিনি। যোগদানের পর থেকেই তিনি অনলাইনে ও অফলাইনে ‘দাওয়াতি’ কার্যক্রম চালাতে থাকেন।

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থেকে নিখোঁজ কলেজছাত্র সাব্বির আহম্মেদকে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্বজনরা জানিয়েছেন, টাঙ্গাইলের সরকারি করটিয়া সা’দত কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ২৪ বছর বয়সী সাব্বির গত ২২ জুন নিখোঁজ জন। এ ঘটনায় এনায়েতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়, র‍্যাব-১৪ কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগও করা হয়। এ ছাড়া তাকে অপহরণের অভিযোগ এনে মামলা (পিটিশন নং-০৮/২১) করা হয় জেলা জজ আদালতে। আদালত ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে পিবিআইকে।

পুলিশ বলছে, ওই সাব্বিরই নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির ময়মনসিংহ অঞ্চলের সামরিক কমান্ডার সাব্বির। দুই সঙ্গীসহ বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়; উদ্ধার করা হয় বিস্ফোরক দ্রব্য, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও ম্যানুয়াল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নতুন সদস্য সংগ্রহের কথা স্বীকার করেছেন। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাব্বির জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির ময়মনসিংহ অঞ্চলের সামরিক কমান্ডার। দুই সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

সিটিটিসির কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে জানান, সাব্বিরের চারটি সাংগঠনিক (কুনিয়া) নাম রয়েছে। এগুলো হচ্ছে বামছি ব্যারেক ওরফে মেজর বামছি ওরফে আবু হাফস আল বাঙ্গালী ওরফে জন ডেভিড। জামালপুরে তার বাড়ি। ২০১৬ সালে অনলাইনে ‘দাওয়াত’ পেয়ে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন তিনি। যোগদানের পর থেকেই তিনি অনলাইনে ও অফলাইনে ‘দাওয়াতি’ কার্যক্রম চালাতে থাকেন।

নাঈম মিয়া

তিনি অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভিডিও দেখে বোমা বানানো শেখেন। তুরস্কে অবস্থানরত মাহাদী হাসান জন ওরফে আবু আব্বাস আল বাঙ্গালী (২৮) নব্য জেএবির আমির হওয়ার পর তাকে সামরিক বিভাগের ময়মনসিংহ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডারের দায়িত্ব দেন। মাহাদী হাসান জন তুরস্কে বসে বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রমে অর্থায়ন করছেন। নব্য জেএমবিকে আরও সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন।

আইইডি তৈরির কারিগর সাব্বির

সিটিটিসি জানায়, গ্রেপ্তার সাব্বির আহমেদ নব্য জেএমবির ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরির অন্যতম কারিগর। তার কাছে আইইডি তৈরির সরঞ্জম রয়েছে। তিনি ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল ও কুড়িগ্রামে একাধিকবার সাংগঠনিক সফর করে ‘দাওয়াতি’ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তার অধীনে প্রায় ২০ জন সক্রিয় সামরিক সদস্য রয়েছেন। তিনি ২০২০ সালের মাঝামাঝি টাঙ্গাইলে ‘ইসলামিক খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘মজলিশ’ গঠন করেন।

বোমা মিজানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ

সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, জেএমবির কারাবন্দি শীর্ষস্থানীয় নেতা জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজানের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতেন সাব্বির। বোমা মিজানের ১৩ বছর বয়সের মেয়ে তোয়াকে তাদের সংগঠনের ‘জিহাদি ভাইদের’ সঙ্গে বিয়ের পরিকল্পনাও করেন। বোমা মিজানের ১৫ বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে দেখা করে তাকে জঙ্গিবাদে জড়ানোর জন্য উৎসাহও দেন তিনি।

কর্মকর্তারা আরও জানান, গোপন সংবাদে গত ৭ জুলাই পল্লবীর ৬নং সেকশনের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইন্ডোর স্টেডিয়ামের দক্ষিণ গেটের বিপরীত পাশে ৬নং হোল্ডিংস্থ নির্মাণাধীন ভবনের সামনে অভিযান চালিয়ে সাব্বির এবং তার দুই সহযোগী মো. রবিউল ইসলাম ওরফে উসমান ও নাঈম মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে আইইডি তৈরির বিপুল সরঞ্জাম, বিস্ফোরক পদার্থ ও বোমা তৈরির ম্যানুয়াল উদ্ধার করা হয়।

রবিউল ইসলাম

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সাব্বির আইইডি তৈরির অন্যতম কারিগর। দীর্ঘদিন ধরে নব্য জেএমবির ময়মনসিংহ অঞ্চলের সামরিক শাখার কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। জঙ্গি কার্যক্রম বিস্তারে সদস্য সংগ্রহও করছিলেন। গ্রেপ্তার অপর দুজন অনলাইন ও অফলাইনে নব্য জেএমবির সদস্য সংগ্রহ করছিলেন। তিনজনের বিরুদ্ধেই পল্লবী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়।

সাব্বির ২২ জুন নিখোঁজ এবং ৭ জুলাই গ্রেপ্তার হয়েছেন। মাঝের এই সময়ে তিনি কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে সিটিটিসির কাউন্টার টেররিজম (সিটি) বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই সময়ে গোপন হিজরতে থাকতে পারেন সাব্বির। অনেক সময় এসব তথ্য তারা পরিবারের কাছে গোপন করেন।’

এ বিভাগের আরো খবর