বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২০ ইঞ্চির রানিকে পাচ্ছেন কে

  •    
  • ৬ জুলাই, ২০২১ ১৯:১৮

‘আমার কাছে সবচেয়ে পছন্দ যদি এটাকে চিড়িয়াখানায় রাখতে পারা যায়। একজন এটাকে জাতীয় চিড়িয়াখানায় দান করতে চেয়েছেন। এটা খুব ভালো উদ্যোগ। আমার হয়তো চিড়িয়াখানায় দান করার মতো অ্যাবিলিটি নাই। যদি উনি আমাকে সহযোগিতা করেন, তখন যদি আমার কিছু লসও হয়, তারপরও আমি দিয়ে দিব।’

শুধু দেশেই নয়, রানির নাম এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে। গিনেস বুকে ঠাঁই পেতে যাওয়া ২০ ইঞ্চি বক্সার ভুট্টি জাতের এই গরুর দেখা মিলেছে সাভারের একটি খামারে। ২৬ কেজি ওজনের রানিকে কিনতে চান অনেক শৌখিন ক্রেতা ও খামারমালিকরা। তাই তো প্রতিদিনই ফোনে ক্রেতারা সর্বোচ্চ ১০ লাখ পর্যন্ত দাম হাঁকছেন গরুটির। কিন্তু খামার কর্তৃপক্ষ গিনেস বুকে নাম ওঠার আগে কোনোভাবেই রানিকে হাতছাড়া করতে নারাজ। এর জন্য অপেক্ষা ৯০ দিনের।

রানির বেড়ে ওঠা সাভার উপজেলার পাথালিয়া গ্রামে শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি খামারে। খামারটির স্বত্বাধিকারী কাজী মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান প্রায় এক বছর আগে তার এক কর্মচারীর মাধ্যমে নওগাঁ থেকে গরুটি সংগ্রহ করেন। এরপর থেকেই রানিকে লালন-পালন করা হয়েছে তার খামারে। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে পরিচিতি পাওয়া রানির খবর বাইরে এসেছে বেশ কিছুদিন ধরেই। তবে আজ দেশের প্রায় সব গণমাধ্যমে প্রচারের পর রানির চাহিদা বেড়েছে। শৌখিন ক্রেতা কিংবা বড় বড় খামারমালিক পালনের জন্যই রানিকে কিনতে চাইছেন চড়া দামেই।

শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক তানভির হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেকেই ফোন দিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রতিদিন রানি রিলেটেড ৫-৬টা কল পাই। বিভিন্ন ক্যাটল ইন্ডাস্ট্রি, শৌখিন পালক এই টাইপের আরকি। কিন্তু আমারা তো গিনেসে নাম ওঠা না পর্যন্ত সেলের চিন্তা করছি না। যদি নাম না ওঠে, তারপরও আমাদের পালার ইচ্ছা আছে। আর যদি স্যার মনে করেন, সেল করবেন, তখন প্রাইসটা অফার করা হবে। তবে স্যারের শখ থেকেই রানিকে পালনের পরিকল্পনা আছে।’

রানিকে কীভাবে সংগ্রহ করলেন, এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নওগাঁর খামারি আমাদের পরিচিত বাবু ভাইয়ের কাছে গরুটি ছিল। ওনার যে সোর্স ছিল তার মাধ্যমে বাবু ভাই গরুটিকে সংগ্রহ করছিল। বাবু ভাইয়ের সংগ্রহে যখন ছিল তখন মানুষজন ওখানে দেখতে যেত। বাবু ভাইয়েরও বেশ কয়েকটি খামার আছে। মূলত উনি সব সময় আনকমন ও নোভাল গরু সোর্সিং করেন। আমরা তো আসলে আগে কিনে ছয় মাস কিংবা এক বছর ধরে পালি। এই যেমন এখন গরু শেষ হয়ে যাবে। ঈদের পরে আমরা আবার একটা সোর্সিংয়ে যাব। সারা দেশেই সোর্সিং করি।’আরও পড়ুন: খর্ব গরুর বিশ্বরেকর্ড গড়বে ‘বাংলাদেশের রানি’

‘বাবু ভাই, আমরা চেষ্টা করছিলাম এটার প্রকৃত মালিকে খুঁজে বের করতে? কিন্তু আমরা আইডেন্টিফাই করতে পারি নাই। আমরা এতটুকু শুনছি এটা পঞ্চগড়ে এক কৃষকের কাছে ছিল। কিন্তু যাদের মাধ্যমে আমরা নিয়েছি, তারা মেইন মালিককে শো করতে পারে নাই। বাবু ভাই যার কাছ থেকে নিয়েছিল, তার নামটাও মনে নাই। অনেক দিন আগে তো। ধরেন সিস্টেমটা এ রকম কেউ ভায়া হয়ে মালিককে শো করবে না। ধরেন, কেউ দুই টাকা দিয়া কিনল। আমার কাছে কিন্তু দুই টাকা বলবে না। দশ টাকা বলবে। এই ফুটআপটার জন্যই আমরা মেইন মালিককে বের করতে পারি নাই।’

বক্সার ভুট্টি জাতের গরুর আকার কী রকম হয়, এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা যখন জন্মায় একেকটা বক্সার ভুট্টি ১৬-২০ ইঞ্চি হয়। এরপর আস্তে আস্তে ৫০-৬০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। আমাদের খামারে অন্য যে বক্সার ভুট্টিগুলো আছে, ওগুলো ৪০-৪৫ ইঞ্চি।’

বক্সার ভুট্টি জাত কীভাবে দেশে এসেছে, এ ব্যাপারে বলেন, ‘এটা প্রথমে নেপাল থেকে ইন্ডিয়ায় আসে। পরে একটা প্রতিবেদন দেখে একজন বাংলাদেশি শখের বশে ওইখান থেকে নিয়ে আসে। তারপর ওইটাকে বিট করা হয়। ওইখান থেকে আস্তে আস্তে সব খামারি ভুট্টি পালন শুরু করে। এখন ম্যাক্সিমাম ৪০০-৫০০ খামারি ভুট্টিটা পালে। আরও বেশি হতে পারে। সব জায়গায় এখন ভুট্টিটা পালে।’

খামারটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের ধরেন যদি টপ ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টরাই বলি, তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। মূলত শৌখিন ব্যক্তিরাই নিতে চাচ্ছেন। আমাকে প্রাইসটা আসলে অনেক রকমই বলেছে। গতকালকে একজন সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাম বলছে। আজকে একজন ১০ লাখ টাকা বলছে। এখন ওনাদের ধারণা হচ্ছে, আমরা হয়তো টাকার জন্য এটা বিক্রি করছি না।

‘কিন্তু আমাদের জন্য জরুরি হচ্ছে গিনেস বুকে এক্সেপ্টেন্সটা আগে চাই। এটা হইলে কেউ যদি শৌখিন নিতে চায়, সেটা ভেবে দেখব। সত্যি কথা বলতে আমি নিজেও পালতে চাই। এর আগে প্রজনন করানোর জন্য ডাক আসছিল। কিন্তু কোনো রিস্ক নিতে চাই নাই। এ জন্য আমি প্রজননও করাই নাই। আমি চাইছি গিনেস বুকে ইন্ডিয়ার জায়গায় বাংলাদেশের নাম আসুক।

‘যতজন আমাকে ফোন করছেন, কেউই কোরবানির কথা বলে নাই। তাদের সবারই চিন্তা হচ্ছে, এটা তো আসলেই ইন্টারেস্টিং একটা প্রাণী। এটাকে সংগ্রহে রাখতে চাই। এর ভিতরে একজন ভদ্রলোক বলেছেন, এই প্রাণীটাকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উনি এটাকে কিনে জাতীয় চিড়িয়াখানায় দান করতে চান।’

রানিকে নিয়ে সবশেষ সিদ্ধান্ত কী নেবেন, এমন প্রশ্নে বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে পছন্দ যদি এটাকে চিড়িয়াখানায় রাখতে পারা যায়। একজন এটাকে জাতীয় চিড়িয়াখানায় দান করতে চেয়েছেন। এটা খুব ভালো উদ্যোগ। আমার হয়েতো চিড়িয়াখানায় দান করার মতো অ্যাবিলিটি নাই। যদি উনি আমাকে সহযোগিতা করে, তখন যদি আমার কিছু লসও হয় তারপরও আমি দিয়ে দিব। কাউকে দিলে অবশ্যই চিড়িয়াখানায় দিতে চাই। এটাই আমার ফাইনাল সিদ্ধান্ত।’

এ বিভাগের আরো খবর