পটুয়াখালীর বাউফলের কনকদিয়া ইউনিয়নে সালিশ করতে গিয়ে কিশোরী মেয়েকে বিয়ে করার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে সরকারকে আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ তিনজনকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সোমবার একই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিক মীরের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মাদ ফারুক হোসেন ই-মেইলের মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে ১৫ দিনের সময় দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে, অন্যথায় পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার একটি সালিসে গিয়ে বাল্যবিয়ে করেন, যেটি আইনত অবৈধ। একজন চেয়ারম্যান হিসেবে শাহিন হাওলাদার রক্ষক থেকে ভক্ষকের ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আছে। তাই চেয়ারম্যানকে সাময়িক নয়, স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সম্প্রতি পটুয়াখালীর কনকদিয়া ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক প্রকাশ পায়। এরপর গত ২৪ জুন রাতে তারা দুজন পালিয়ে যায়। বিষয়টি কিশোরীর বাবা কনকদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান।
এরপর চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়ার কথা বলে ২৫ জুন কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে ছেলে ও মেয়ের পরিবারকে যাওয়ার নির্দেশ দেন। ওই দিন সকাল ৯টার দিকে দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান। সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান। ওই দিনই দুপর ১টায় স্থানীয় কাজীকে বাড়িতে ডেকে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার।
বিয়ের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে সমালোচনার মুখে ২৬ জুন একই কাজীর মাধ্যমে কিশোরী মেয়েটিকে তালাক দেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার।
চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের দাবি, মেয়েটি তাকে স্বামী হিসেবে মেনে না নেয়ায় তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বর্তমানে মেয়েটি তার বাবার হেফাজতে আছে বলেও জানা গেছে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ জুন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।