বরিশালের উজিরপুরে রিমান্ডে থাকা নারী আসামিকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয় থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বরিশালের পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ডিআইজি কার্যালয়ের একজন পুলিশ সুপার এবং জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত ২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় তার ভাই বরুণ চক্রবর্তী এক নারীকে আসামি করে মামলা করেন। এতে বলা হয়, সেই নারীর সঙ্গে তার ভাইয়ের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল।
মামলার পরই সেই নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। থানা পুলিশ তাকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করলে ৩০ জুন বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম উজিরপুর আমলী আদালত তাকে ২ দিনের রিমান্ডে পাঠান।
রিমান্ড শেষে ২ জুলাই আদালতে তোলার পর তাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
বিচারক তখন একজন নারী কনস্টেবল দিয়ে তার দেহ পরীক্ষা করে নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পান।
পরে বিচারক সেই নারীকে যথাযথ চিকিৎসা এবং তাকে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে নির্দেশ দেন।
শুক্রবার রাত ১০টায় ওই আসামিকে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে রাত ৩টায় কারাগারে নেয়া হয়।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন নারী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা প্রদান এবং শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের বিষয়ে যথাসময়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে।’
তবে প্রতিবেদনে কী উল্লেখ আছে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি পরিচালক।
আসামির আইনজীবী মজিবর রহমান বলেন, ‘পুলিশ আদালত অবমাননা করেছে। আমি বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি এবং আগামী ৮ জুলাই আদালত চালু হলে এই বিষয়ে আদালতে অবহিত করব।’
তিনি জানান, তার মক্কেলকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত ২ দিনের রিমান্ড দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয়।
তার অভিযোগ, পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে স্পর্শকাতর স্থানে নির্যাতন করেছে, যা যৌন নির্যাতনের শামিল।
আসামির ভাই বলেন, ‘আমার বোনকে থানায় রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতন করে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. মাইনুল। এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় একজন সাবেক এমপিকে দিয়ে আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে।’
যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই পুলিশ কর্মকর্তা মো. মাইনুল বলেছেন, ‘এটা পুরোপুরি মিথ্যা। মামলা থেকে আসামি বাঁচতে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন।’