পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে দেবরের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার অভিযোগে করা মামলায় ভাবি ফাতেমা আক্তার সোমার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই নিজামুদ্দিন ফকির বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত ৩ এপ্রিল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক অমল কৃষ্ণ দে ১৪ জন সাক্ষীর নাম অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করে নিবন্ধন শাখায় জমা দেন।
অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতা শুনানির জন্য আগামী ২৮ জুলাই তারিখ দিয়েছে আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী সামিউল তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট।
ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর গত বছর ২২ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী সামিউলের মেজো ভাই আফজাল হোসেন শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
তিনি জানান, তার ছোট ভাই ভুক্তভোগী সামিউল স্টিলের প্লেনসিটের দোকানে চাকরি করেন। তিনি তার বেতনের টাকা ভাবি ফাতেমার কাছে জমা রাখতেন।
গত বছরের ৯ নভেম্বর সামিউল কেরানীগঞ্জের বাসা থেকে কাজে বের হলে ফাতেমা তাকে ফোন দিয়ে জানান, তিনি বঙ্গবাজারে কেনাকাটা করে পীর ইয়ামেনি মার্কেটের সামনে যাবেন। সেখানে তাকে জমানো টাকা ফেরত দেবেন।
এরপর সামিউল টাকা নিতে পীর ইয়ামেনি মার্কেটের সামনে যান। তখন তার ভাবি বলেন, ‘রাস্তায় বসে তো পাঁচ লাখ টাকা দেয়া ঠিক হবে না। তাই চলো আমরা পীর ইয়ামেনী আবাসিক হোটেলের মধ্যে গিয়ে লেনদেনটি সেরে ফেলি।’
এরপর সামিউল ফাতেমার সঙ্গে পীর ইয়ামেনি আবাসিক হোটেলের পঞ্চম তলার ৫১৪ নম্বর কক্ষে যান। সেখানে তাকে চেতনানাশক স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলা হয়। তারপর তার পুরুষাঙ্গের মাথা কেটে ফেলেন।
ঘণ্টা দুয়েক পরে সামিউল দেখতে পান তার সারা শরীর রক্তে ভিজে গেছে।
তখন ফাতেমা সামিউলকে গালাগালি করে পুরুষাঙ্গের কাটা অংশ দেখিয়ে বলে, ‘বিয়ে করবি? তোর বিয়ের স্বাদ মিটিয়ে দিয়েছি।’
বিষয়টি গোপন রাখার কথা বলে হুমকি দেন বলেও মামলায় বলা হয়।
এরপর ফাতেমা তার অজ্ঞাতপরিচয় দু-তিনজন সহযোগীকে নিয়ে সামিউলকে অটোরিকশায় করে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে চিকিৎসা না হওয়ায় তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেও চিকিৎসা না হওয়ায় সর্বশেষ আল মানার হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।
গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ভুক্তভোগীর বড় ভাই শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
এরপর আসামি ফাতেমা আক্তার সোমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ২৩ ডিসেম্বর আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
২৬ ডিসেম্বর দুই দিনের রিমান্ড শেষে আসামি ফাতেমা আক্তার সুমাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।