সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু গ্রামে হামলা মামলার প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা স্বাধীন মেম্বার জামিন পেয়েছেন।
সুনামগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক বদরুল আলম নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার আসামির জামিন আবেদন গ্রহণ করেন। মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়ার আগ পর্যন্ত তিনি জামিনে থাকবেন বলে জানা গেছে।
গত ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস আপন। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।
এরপর ওই স্ট্যাটাস নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি করে হেফাজত ও মামুনুলের অনুসারীরা। তারা ঝুমনের স্ট্যাটাসকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে প্রচারণা চালায়। উত্তেজনা আঁচ করতে পেরে ওই রাতেই ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন নোয়াগাঁও গ্রামবাসী।পরদিন ১৭ মার্চ সকালে কয়েক হাজার লোক সশস্ত্র মিছিল নিয়ে এসে ঝুমনের নোয়াগাঁওয়ে তাণ্ডব চালায়। তারা গ্রামের প্রায় ৯০টি হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
এই ঘটনায় করা হয় দুটি মামলা। হবিবপুর ইউপির চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল প্রথম মামলাটি করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় দিরাইয়ের তাড়ল ইউনিয়নের সদস্য স্বাধীন মিয়াকে। এ মামলায় ৮০ জনের নাম ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরেকটি মামলা করা হয় শাল্লা থানার পুলিশের পক্ষ থেকে। তাতে আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় দেড় হাজার ব্যক্তিকে।
ঝুমনকে আটকের পর প্রথমে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এরপর শাল্লা থানার এক উপপরিদর্শক বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
যে হেফাজত নেতার সমালোচনা করে ফেসবুকে লিখেছিলেন ঝুমন, সেই মামুনুল এখন দেশজুড়ে সমালোচিত-বিতর্কিত। সহিংসতাসহ নানা অভিযোগে তিনি কারাগারে। এখন জামিন পেলেন শাল্লায় হামলা মামলার প্রধান আসামিও। কিন্তু তিনমাস ধরে কারাগারে আছেন ঝুমন।