সিলেটের ওসমানী নগরে গৃহকর্ত্রীকে হত্যার পর গৃহকর্মী আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। ওসমানী নগরের দয়ামীর ইউনিয়নের সোয়ারগাঁও এলাকায় বাড়ি থেকে দুই মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এমনটাই জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
ওই বাড়িতে শনিবার মধ্যরাতে পাওয়া যায় সোয়াইরগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তপতী রানী দের রক্তাক্ত ও গৃহকর্মী গৌরাঙ্গ বৈদ্যর ঝুলন্ত মরদেহ। পাওয়া যায় রক্তমাখা একটি বঁটিও।
সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন রোববার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, শিক্ষিকাকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে নিজে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই গৃহকর্মী।’
তিনি বলেন, ‘তপতী রানী যে বাড়িতে থাকতেন, সেই বাড়ির নিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই শক্ত। ভেতর থেকে সব দরজা ও ফটক তালা দেয়াই ছিল। ফলে বাইরে থেকে কেউ ভেতরে প্রবেশের কোনো আলামত পাইনি। কোনো ক্ষোভের বশে গৌরাঙ্গই তপতী রানীকে হত্যা করতে পারেন। আপাতত এ ধারণা থেকেই তদন্তে এগোচ্ছি। তবে তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’
একই ধারণা তপতীর ছেলে চিকিৎসক বিপ্লব দেরও। ছেলে ও স্বামী বিজয় দের সঙ্গে ওই বাড়িতে থাকতেন তপতী। মেয়ের বিয়ে হয়েছে সিলেট শহরে। ঘটনার সময় চিকিৎসক স্বামী ও সন্তান ছিলেন কাজে।বিপ্লব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গৌরাঙ্গ অনেক দিন ধরেই আমাদের বাসায় মায়ের কাজের সহযোগী হিসেবে আছে। কিছুদিন ধরেই সে খিটখিটে মেজাজে অস্বাভাবিক আচরণ করত। তুচ্ছ বিষয়েই ঝগড়া জুড়ে দিত।’
তবে ঠিক কী কারণে তার মাকে গৌরাঙ্গ হত্যা করে থাকতে পারেন, সে বিষয়টি তিনি নিশ্চিত নন বলে জানান।
প্রতিবেশীরা জানান, শনিবার বিকেলে প্রাইভেট প্র্যাকটিসে গিয়েছিলেন তপতীর স্বামী ও ছেলে। ঘরে তপতী ও গৌরাঙ্গ ছিলেন। রাত ১১টার দিকে এক প্রতিবেশী বাথরুমের জানালা দিয়ে ওই বাড়ির একটি ঘরে গৌরাঙ্গর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। প্রায় সে সময় তপতীর স্বামী বিজয় বাড়ি ফেরেন। তিনি সে দৃশ্য দেখে পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে মেঝে থেকে তপতীর গলাকাটা ও ঝুলন্ত অবস্থায় গৌরাঙ্গর মরদেহ উদ্ধার করে।
রোববার দুপুর পর্যন্ত মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত হয়নি। মামলাও হয়নি। তবে ওসমানী নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক বলছেন, এসবের প্রস্তুতি চলছে।