বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পরীমনির মামলায় নাসির-অমি গ্রেপ্তার

  •    
  • ১৪ জুন, ২০২১ ১৫:২৩

নাসির উদ্দিন মাহমুদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান। ছিলেন লায়ন ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট চেয়ারম্যান।

ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনির করা মামলার প্রধান দুই আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার সোমবার বিকেলে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

অভিযানে নেতৃত্বে দেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ। তিনি জানান, সোমবার বিকেল ৩টার দিকে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরে অমির বাসা থেকে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় বাসা থেকে লিপি, সুমি ও স্নিগ্ধা নামের তিন তরুণীকে মাদকসহ আটক করা হয়।

হারুন-অর-রশিদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘নাসির উদ্দিনকে আমরা গতকাল রাত থেকেই নজরদারিতে রেখেছিলাম। কিন্তু মামলা না হওয়াতে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারছিলাম না। যখন মামলা হয়েছে তখনই আমরা এই বাসায় অভিযান চালাই। এটি হলো অমির বাসা। এখানে নাসির উদ্দিন আত্মগোপনে ছিলেন এবং পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।

‘নাসির এবং অমি দুইজনই নায়িকা পরীমনির মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। অভিযান চালানোর সময় এই বাসা থেকে কিছু বিদেশি মদ ও ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তিন তরুণীকেও আটক করা হয়েছে।’

তিনি জানান, আটক তিন তরুণীকে মাদক উদ্ধারের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘গ্রেপ্তার অমি পরিকল্পনা করে পরীমনিকে বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নাসির উদ্দিনের তাকে হত্যা ও ধর্ষণের পরিকল্পনা ছিল কি না, তা আমরা স্পষ্ট নই। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

‘মদ্যপান করে অসংলগ্ন আচারণ ও বিভিন্ন অপরাধের জন্য নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মামলা হয়েছে। আমরা এখন তাকে সেসব মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখাব।’

নাসির ইউ মাহমুদ বা নাসির উদ্দিন মাহমুদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান। ছিলেন লায়ন ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট চেয়ারম্যান।

পরীমনি রোববার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনার কয়েক ঘণ্টা পর বিষয়টির বিস্তারিত নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে আসেন।

পরী জানান, ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরা বোট ক্লাবে। নাসির উদ্দিন নামে একজন তাকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে এই ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন।

সাংবাদিকদের পরী জানান, ঘটনার পর থেকে দ্বারে দ্বারে ‍ঘুরেও কোথাও কোনো সহযোগিতা পাননি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি নিজের জীবন নিয়েও আশঙ্কার কথা জানান এই অভিনেত্রী।

পরীর সংবাদ সম্মেলনের পর বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয় পুলিশ।

ডিবির গুলশান জোনের ডিসি মশিউর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, নাসির উদ্দিনকে ধরতে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তাকে সেখান থেকে আটক করা হয়।

মামলার জন্য পরীমনির লিখিত এজাহার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রূপনগর থানা থেকে সোমবার সকালে সাভার থানা পুলিশের কাছে পৌঁছায়।

মামলার এজাহারের একটি কপি এসেছে নিউজবাংলার হাতে। এতে পরীমনি জানান, গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, অমি ও বনিসহ দুটি গাড়িতে উত্তরার দিকে যান।

‘পথিমধ্যে অমি বলে বেড়িবাঁধে ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডে তার ২ মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামতো আমরা ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে গাড়ি দাঁড় করাই।

কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। তখন অমি ভেতরে যায় এবং অমি অনুরোধ করে এখানের পরিবেশ অনেক সুন্দর, তোমরা নামলে নামতে পারো।’

এজাহারে পরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমার ছোট বোন বনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলে আমরা ঢাকা বোট ক্লাবে প্রবেশ করে বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করি। টয়লেট হতে বের হতেই ১নং বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদেরকে ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ ১নং আসামি মদ্যপান করার জন্য জোর করেন। আমি মদ্যপান করতে না চাইলে ১নং আসামি জোর করে আমার মুখের মধ্যে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আমার সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই।

‘১নং আসামি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন ও আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ১ নং আসামি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারেন। তখন আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ১নং আসামিকে বাধা দিতে চাইলে তাকেও মারধর করে নীলাফোলা জখম করে। আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিতে গেলে আমার ব্যবহৃত ফোনটি টান মেরে ফেলে দেয়। পুনরায় ফোনটি উঠিয়ে কল দিতে চাইলে আবারও ফোনটি টেনে ফেলে দেয়।’

এজাহারে পরী আরও বলেন, ২নং আসামি (অমি) সহ অজ্ঞাতনামা চারজন আসামি ১নং আসামিকে ঘটনা ঘটাতে সহায়তা করে। আমি অজ্ঞাতনামা আসামিদের দেখলে শনাক্ত করতে পারব। প্রকাশ থাকে যে, ২ নং আসামি অমি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাকে আমার বর্তমান বাসা থেকে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে যায় এবং ২ নং আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৪ জন আসামির সহায়তায় ১ নং আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে এবং জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

‘আমার সঙ্গীদের সহায়তায় ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পাই। রাত অনুমান ৩টায় আমি আমার গাড়ীযোগে প্রায় অচেতন অবস্থায় আমার সঙ্গীদের সঙ্গে ফিরে আসি। উল্লেখ্য যে, আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে আমি আমার পরিবার, শিল্পী সমিতি ও অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এই এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হলো।’

এ বিভাগের আরো খবর