চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যার নাম এসেছে, সেই ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদের অবস্থানের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। উত্তরা ক্লাব ও নাসিরউদ্দিনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কুঞ্জ ডেভেলপার্সের সঙ্গে কথা বলে তার অবস্থানসংক্রান্ত কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি।
রোববার ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন পরীমনি। তবে পোস্টে কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। পরে রাতে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে ব্রিফিংয়ে তিনি তার ওপর হামলাকারী হিসেবে ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদের নাম উল্লেখ করেন।
উত্তরা বোট ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাসিরউদ্দিন মাহমুদ উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। ছিলেন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট চেয়ারম্যান।
নাসিরউদ্দিন মাহমুদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তিনি কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেড নামে একটি আবাসন কোম্পানির চেয়ারম্যান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী নাসিরউদ্দিন একসময় সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রোববার রাতে অসংখ্যবার নাসিরউদ্দিন মাহমুদের মুঠোফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি তার ফেসবুক পেজটিও বন্ধ রেখেছেন রাত থেকে।
এ ছাড়া উত্তরা ক্লাবের ওয়েবসাইটে যোগাযোগের যে নম্বর দেয়া হয়েছে সেখানেও কয়েকবার ফোন করা হয়। তবে অপর প্রান্ত থেকে জানানো হয়, সদস্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়ার বিধান তাদের নেই।
নাসিরুদ্দিনের অফিসে ঝুলছে তালা
চিত্রনায়িকা পরীমনিকে নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত আবাসন ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিরউদ্দিন মাহমুদের কুঞ্জ ডেভলপার্সের কার্যালয়ে তালা ঝুলছে।
সোমবার সকাল থেকে অফিসে কোনো কর্মকর্তা আসেননি। উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গরীব নেওয়াজ এভিনিউয়ের ২০ নম্বর বাড়ির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ১০ তলা ভবনটির নাম আর এস কুঞ্জ, সামনে বড় অক্ষরে লিখা কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেড। এই ভবনের আট তলায় নাসিরউদ্দিনের অফিস।
ভবনের মূল ফটকে ঢুকতেই দেখা হয় নিরাপত্তাকর্মী রাজুর সাথে। তিনি জানান, কয়েকদিন হলো চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। নাসিরউদ্দিন ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বেশি কিছু জানা নেই তার।
অফিসে কেউ আসেনি কেন, জিজ্ঞেস করলে রাজু বলেন, ‘বড় স্যারের কোনো একটা ঝামেলা হইছে সকালে শুনছি, এরপর আজকে আর কেউ অফিস খুলে নাই।’
টেলিফোনে কথা হয় নাসিরউদ্দিনের অফিস সহকারী বিধান বাবুর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নাসিরউদ্দিন স্যার কোম্পানির চেয়ারম্যান। তার বড় ছেলে মো. সালমান মাহমুদ কোম্পানীর এমডি।’
নাসিরউদ্দিনের ছোট ছেলের নাম জানাতে না পারলেও তিনি দেশের বাইরে থাকেন বলে জানান বিধান। বলেন, নাসিরউদ্দিন ও তার বড় ছেলে নিয়মিতই অফিস করেন। গতকালও তারা অফিসে এসেছেন। কিন্তু আজ কেউ অফিসে আসেননি।
নাসিরুদ্দিন, তার ছেলে ও অফিসের অন্য কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর চাওয়া হলে ম্যাসেজ করে দিচ্ছি বলে ফোন কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন বিধান।
ভবনের ৮ তলায় গিয়ে দেখা যায়, কুঞ্জ ডেভলপার্সের অফিসের গেইটে তালা দেয়া। ভিতরে রিসিপশনের ডেস্ক ফাকা। একই সময়ে এই অফিসে নাসিরুদ্দীনের খোঁজে আসেন উত্তরা পশ্চিম থানা ও গোয়েন্দা বিভাগের দুটি দল। তবে তারা কোনো কথা বলেননি।