বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দ্বিতীয় স্ত্রীর কথা জানে না সৌমেনের বাড়ির কেউ

  •    
  • ১৪ জুন, ২০২১ ১৩:৫২

‘যে মহিলারে মারিছে বলে বলা হচ্ছে, তার কথা কোনোদিন আমরা শুনিনি। কিছুদিন আগে সৌমেন বাড়ি আসে। আমাদের সঙ্গে দুবেলা সময় কাটায়ে চলে যায়। তারে তো কোনোদিন বিয়াদবি আচরণ করতে দেখি নাই।’

‘আমার জামাই যে এই কাজ করতি পারে তা আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। সে আমাগের জামাই।’

কথাগুলো বলছিলেন খুলনার ফুলতলী থানার সদ্য বহিষ্কৃত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন রায়ের চাচিশাশুড়ি শিখা বিশ্বাস।

কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড়ে রোববার প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী আসমা খাতুন, আসমার আগের পক্ষের পাঁচ বছরের ছেলে রবিন ও তাদের সঙ্গে থাকা যুবক শাকিল খানকে হত্যা করেন সৌমেন রায়। এর পরপরই এলাকার লোকজন সৌমেনকে অবরুদ্ধ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে।

সৌমেনের বিষয়ে জানতে তার গ্রামের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলায় আসবা গ্রামে যান নিউজবাংলার প্রতিনিধি। সেখানে গিয়ে পাওয়া যায়নি তার প্রথম স্ত্রী, মা, শ্বশুর-শাশুড়ি কিংবা কাছের কোনো আত্মীয়স্বজনকে। কথা হয় তার চাচিশাশুড়ি শিখার সঙ্গে।

নিউজবাংলাকে শিখা বলেন, ‘১৬ বছর আগে বিয়ে হয় আমাগের মেয়ের সঙ্গে। সুখের সংসার। আমাগের আত্মীয়স্বজন অনেকেই পুলিশে সুনামের সঙ্গে চাকরি করে আসছে…আমার জামাই যে এই কাজ করতি পারে, তা আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না।’

শিখা জানান, কুষ্টিয়ার ওই ঘটনায় গুলিতে নিহত নারী সৌমেনের স্ত্রী কি না, তা তিনি জানেন না।

তিনি বলেন, ‘যে মহিলারে মারিছে বলে বলা হচ্ছে, তার কথা কোনোদিন আমরা শুনিনি। কিছুদিন আগে সৌমেন বাড়ি আসে। আমাদের সঙ্গে দুবেলা সময় কাটায়ে চলে যায়। তারে তো কোনোদিন বিয়াদবি আচরণ করতে দেখি নাই।’

কুষ্টিয়ায় তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার সৌমেন রায়

সৌমেনের বাড়িটি আধাপাকা। ফটকে ঝুলছে তালা। বাড়িতে মা ও ছোট ভাই থাকতেন।

তিনি যখন ছোট, তখনই বাবা মারা গেছেন। আশপাশের লোকজন ও অন্য স্বজনরা বলছেন, রোববারের ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই এই বাড়ির লোকজন কোথাও চলে গেছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

সেখানে সৌমেনের শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়রা জানান, তার স্ত্রীর নাম লাকী রায়। তাদের দুই সন্তান আছে। তিন ভাইবোনের মধ্যে মেজো সৌমেন।

স্থানীয় লোকজনও নিউজবাংলাকে জানান, সৌমেনের স্ত্রী হিসেবে লাকীর কথাই তারা জানেন। আর কোনো স্ত্রী আছে বলে তারা কোনোদিন শোনেননি।

এদিকে তিন খুনের ঘটনায় রোববার রাতে সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহত যুবক শাকিল খানের বাবা মেজবার রহমান।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে সৌমেনকে আদালতে তোলা হবে।

ঘটনার পর রোববার বিকেলে খুলনা থেকে কুষ্টিয়া যান রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি এ কে এম নাহিদুল ইসলাম।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, সৌমেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। খুলনা রেঞ্জ ও কুষ্টিয়া পুলিশের আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, তদন্ত প্রতিবেদনের পর সৌমেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিন মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তাপস কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিহত শাকিলের মাথায় ও ডান পায়ের উরুতে, আসমা খাতুনের মাথায় ও গলায় এবং শিশু রবিনের মাথায় ও পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে। কাছ থেকে গুলি করায় শরীর ভেদ করে গুলি বাইরে বের হয়ে গেছে।’

ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসমা ও তার ছেলেকে তাদের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর নাতুড়িয়া গ্রামে ও শাকিল খানকে চাপড়া ইউনিয়নের সাওতা গ্রামে দাফন করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর