সৌদি আরব থেকে দেশে পা রাখতেই ডাকাতের কবলে পড়া আকরাম হোসেন শাহিনের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ। লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারের আশ্বাস দিয়ে তাকে ডেকে পাঠিয়েছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানা পুলিশ।
পুলিশের আশ্বাস পেয়ে শাহিন ফেনীর দাগনভূঞা থেকে সোনারগাঁও থানায় যাচ্ছেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে তিনি নিজেই বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
শাহিন বলেন, ‘সোনারগাঁও থানা পুলিশের এসআই দিলীপ স্যার আমাকে যেতে বলেছেন। পাসপোর্ট, ভিসার বিষয়ে একটা বুঝ করা যাবে বলে জানিয়েছেন। এরপরই আমি ফেনীর দাগনভূঞা থেকে সোনারগাঁও যাচ্ছি। এখন আমি কুমিল্লাতে আছি।’
শাহিনের বাবার নাম লোকমান হোসেন; পেশায় অটোরিকশাচালক। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে শাহিন ছোট। শাহিনের জন্য বিয়ের পাত্রী ঠিক করা হয়েছিল। সেই বিয়ে উপলক্ষে হবু স্ত্রীর জন্য গয়না, নতুন জামাকাপড় নিয়ে এসেছিলেন। এ ছাড়া তার একাধিক লাগেজ ও নগদ টাকা ছিল। সঙ্গে পাসপোর্টসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।
বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি ফেরার পথে নারায়ণগঞ্জের মোগড়াপাড়া হাইওয়েতে ডাকাতদের হাতে সবকিছুই খুইয়ে শাহিন এখন নিঃস্ব।
আকরাম হোসেন শাহিন
গত শুক্রবার সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাস্তায় বসে শাহিনের আহাজারির ছবি ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিউজবাংলার পক্ষ থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে জানানো হয়। এরপর পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা ছবির ভিকটিম ও ঘটনাস্থল শনাক্তের নির্দেশনা পাঠান বিভিন্ন থানায়। অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থল ও শাহিনের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাহিনকে অভিযোগ দায়ের করার জন্য ডেকে পাঠিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ‘নিউজবাংলার মাধ্যমে তথ্য পাওয়ার পরপরই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি নিজেই নজরদারি করছি। আশা করছি, কালপ্রিটরা ধরা পড়বে।’
শাহিনের কান্নার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেই ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে, সেই ‘দাগনভূঞা রেমিট্যান্স যোদ্ধা কল্যাণ পরিষদ’-এর অ্যাডমিন নবিউল ইসলাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাহিন আমাদের পরিচিত। সে যাতে পুনরায় বিদেশ যেতে পারে, তার পাসপোর্ট ফিরে পায় সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।’