বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেই স্কুলভবনটি ভূমিকম্প সহনীয় ছিল না

  •    
  • ৮ জুন, ২০২১ ১৬:৩৫

ভবনটি প্রায় ২৮ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল। ফাটল দেখা দেয়ায় সেটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে শ্রেণিকক্ষসংকট বাড়বে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

সিলেটে যে স্কুলভবনে সোমবার সন্ধ্যার ভূমিকম্পে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেই ভবনটি ত্রুটিপূর্ণভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।

জেলা শিক্ষা ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম জানান, ভবনটি ভূমিকম্প সহনীয় মাত্রায় নির্মাণ করা হয়নি।

ফাটল ধরা ভবনটি পরিদর্শন শেষে মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য জানান তিনি।

ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত সিলেট অঞ্চলে কোনো নিয়মনীতি না মেনেই গড়ে উঠেছে একের পর এক ভবন। বিশেষজ্ঞদের মতে, জেলার বেশির ভাগ ভবনই ভূমিকম্প সহনীয় নয়। বিল্ডিং কোড না মেনেই গড়ে উঠেছে এসব ভবন।

তাদের মতে, বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে এসব ভবনের কারণে ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেড়ে যাবে। ৭ মাত্রার ভূমিকম্পেই ভেঙে পড়বে নগরের ৮০ শতাংশ বহুতল ভবন।

এই আতঙ্কের মধ্যেই সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটে দুই দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পেই ফাটল দেখা দেয় নগরের বন্দরবাজার এলাকার রাজা জিসি স্কুলের একটি দ্বিতল ভবনে।

‘কামরান ভবন’ নামে ভবনটির প্রতিটি কক্ষের দেয়ালেই ফাটল দেখা দেয়। এতে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ফাটলের খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শিক্ষা ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিমের নেতৃত্বে একটি দল ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যায়।

পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ভবনটি প্রায় ২৮ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল। ফাটল দেখা দেয়ায় সেটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। প্রয়োজনে ভূমিকম্প প্রতিরোধক আরেকটি ভবন তৈরি করা হবে।

এই প্রকৌশলী বলেন, জেলায় গত দুই বছর যতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো ভূমিকম্প সহনশীল মাত্রায় তৈরি করা হচ্ছে। ওই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার কারণে শ্রেণিকক্ষের সমস্যা থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করে দেয়া হবে।

এর আগে ভূমিকম্পের পর সোমবার রাতে ওই ভবনটি পরিদর্শন করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তখন তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটি দ্রুতই ভেঙে ফেলা হবে।

এই ভবনের পেছনে বড় পুকুর ছিল উল্লেখ করে মেয়র আরিফ বলেন, ‘এই স্কুলসহ নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবন ও মার্কেট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আমরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছি। বৈঠকে নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবন ও মার্কেট দ্রুত পরীক্ষা করার বিষয়ে আলোচনা করা হবে।’

সিলেটের প্রখ্যাত দানশীল ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষানুরাগী রাজা গিরিশচন্দ্র নিজের নামে ১৮৮৬ সালে রাজা জিসি হাই স্কুল নির্মাণ করেন। এ বিদ্যালয়ে ২০০৬ সালে একটি ভবন নির্মিত হয়। সিটি করপোরশেনের তৎকালীন মেয়র প্রয়াত বদরউদ্দিন আহজমদ কামরানের নামে এই ভবনটির নামকরণ করা হয় ‘কামরান ভবন’।

২০১৭ সালের এই ভবনের দিকে দ্বিতীয় তলার কাজ শেষ হয়। রাজা জিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মুমিন বলেন, সোমবারের ভূমিকম্পে ওই ভবনের প্রতিটা কক্ষে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞানাগারসহ ওই ভবনটিতে ১০টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে।

এই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় শ্রেণিকক্ষসংকট বাড়বে। স্কুল খুললে শিক্ষার্থীদের মাঠে বসিয়ে ক্লাস করাতে হবে। তিনি সরকারের কাছে বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানান।

এ বিভাগের আরো খবর