প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটক করে রাখার ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে প্রতিবেদনটি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার কাছে আছে বলে নিশ্চিত হয়েছে নিউজবাংলা।
গত ১৭ মে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। এতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) মো. সাইফুল্লাহিল আজমকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব মো. আবদুছ সালাম ও মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা।
তিন কার্য দিবস অর্থাৎ ২০ মের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। পরে দুই দিনের সময়ের আবেদন করা হয়। এই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয় মন্ত্রণালয়ে।
তবে কোন দিন প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয়েছে, কার কাছে জমা দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে রাজি হননি কমিটির সদস্যরা।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) মো. সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, ‘আমরা দুই দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিলাম। পরে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কথা বলবেন।’
তার মুখেই শোনা গেল, বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মুহিবুর রহমান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদনটি জমার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যসচিবের কাছে ২৪-২৫ মে জমা দেয়া হয়েছে।’
তদন্ত প্রতিবেদনে কী পাওয়া গেল, জানতে চাইলে মুহিবুর বলেন, ‘সেটা আমি জানি না।’
আদালত প্রাঙ্গণে রোজিনা ইসলাম। ছবি: সাইফুল ইসলাম
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কিছু জানানো হবে কি না, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত কিছু জানাননি মুহিবুর। বললেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নেবেন।’
স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া মন্ত্রণালয়ের জরুরি সভায় ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
গত ১৭ মে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে রোজিনাকে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন সেখানকার কর্মকর্তারা। ওই দিন রাতে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি চুরির অভিযোগে মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই মামলায় রোজিনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এসবের মধ্যে গত ২৩ মে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেয়ার শর্তে রোজিনাকে জামিন দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ।