বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ইউএনওকে ছাড় দিয়েছে তদন্ত কমিটি’

  •    
  • ৫ জুন, ২০২১ ২৩:৫৬

‘নারায়ণগঞ্জে করোনার কারণে বিপাকে পড়া ব্যবসায়ীর সহায়তা চাওয়ার পর ত্রাণ বিতরণে বাধ্য করার ঘটনা অত্যন্ত আলোচিত। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন রাতে জমা দেয়া হলো। আমরা ফরিদের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না তাই তদন্ত আরও পরিস্কার হওয়া প্রয়োজন ছিল, আরও নিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন ছিল।’ 

নারায়ণগঞ্জে করোনার কারণে বিপাকে পড়া ব্যবসায়ীর সহায়তা চাওয়ার পর ত্রাণ বিতরণে বাধ্য করার ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরাকে ছাড় দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন নাগরিক কমিটির নেতারা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল নিউজবাংলাকে বলেন, তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি। কারণ ইউএনও সরাসরি ফরিদের বাড়িতে গিয়ে তাকে জরিমানা করেছেন। মেম্বার ভুল তথ্য দিয়েছেন বলে তাকে দোষী করা হয়েছে। কিন্তু ইএনওকে নয়। আমরা মনে করি, তদন্ত কমিটি ইউএনওকে ছাড় দিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দিপু নিউজবাংলাকে বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা যদি নিজেরাই তাদের তদন্ত করে তাহলে তাদের কাছে আমরা আর কী আশা করতে পারি।

‘এটি একটি আলোচিত ঘটনা। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন রাতে জমা দেয়া হলো। আমরা ফরিদের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না তাই তদন্ত আরও পরিস্কার হওয়া প্রয়োজন ছিল, আরও নিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন ছিল।’

গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম ব্যাপারী।

প্রতিবেদনে বিপাকে পড়া ব্যবসায়ী খাদ্য সহায়তা চেয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার পর তাকে ১০০ জনকে ত্রাণ বিতরণে ইউএনওর বাধ্য করার ঘটনায় ইউএনওকে দোষী নয় সতর্ক করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। অন্যদিকে স্থানীয় মেম্বারের ভুল তথ্যে এ ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

যা ঘটেছিল

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের দেওভোগ নাগবাড়ি এলাকার ফরিদ আহমেদ গত ২০ মে খাদ্য-সহায়তা চেয়ে ৩৩৩ নম্বরে কল দেন।

খাবার নিয়ে আসেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, অফিস সহকারী কামরুল ইসলাম। পরে তারা ভবন দেখে ফোন দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা আসেন ঘটনাস্থলে। দেন শাস্তির ঘোষণা।

জানান, সরকার প্রতি প্যাকেটে যে পরিমাণ খাবার দেয় দুস্থদের, সেই পরিমাণ খাবারসহ ১০০ প্যাকেট করে বিতরণ করতে হবে।

নির্দেশমতো শনিবার বিকেলে ফরিদ আহমেদ সেই খাবার বিতরণও করেন। আর সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউএনও স্বয়ং।

ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরিদের জীবনের কাহিনি জেনেছে নিউজবাংলা। কিন্তু জানেননি ইউএনও।

ফরিদ আহমেদকে টাকা তুলে দেয়ার ঘটনাতেও লুকোচুরি করেছে প্রশাসন। নিজেরা না গিয়ে টাকা দেয়া হয় স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির এই নেতাকে দিয়ে

ফরিদ থাকেন চারতলা বাড়িতে, গেঞ্জি কারখানাও আছে। এটুকু সত্য। কিন্তু এর পেছনে আরও অনেক কাহিনি আছে।

সেই কারখানা বন্ধ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। পরে সংসার চালাতে সেই ব্যক্তি কাজ নিয়েছেন আরেক কারখানায়, কিন্তু চোখের সমস্যায় সেই কাজও করতে পারেন না। সংসারের আয় নেই। আর তিনি যে বাসায় থাকেন, সেটি তাদের ছয় ভাই-বোনের। নিজের অংশ কমই।

এসব কথা না জেনেই ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য চাওয়ায় কেবল বাড়ি দেখে আর কারখানা থাকার খবর শুনে তাকে ১০০ জনকে খাবার বিতরণে বাধ্য করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা।

সেদিন নিউজবাংলা প্রকাশ করে ‘ত্রাণ সত্যিই দরকার ছিল ফরিদের, ভুল ইউএনওর’ শিরোনামে সংবাদ।

তোলপাড় হলে পরদিন ফরিদ আহমেদের বাড়িতে একে একে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন গিয়ে তার জীবনের কাহিনি শুনে আসেন। সেদিন বিকেলের দিকে চুপি চুপি ফরিদকে টাকা ফেরত দেয়া হয়।

এই টাকা ফরিদের হাতে তুলে দিয়েছেন দেওভোগ নাগবাড়ি পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টা সাহিনুর আলম।

গণমাধ্যমের কাছে তিনি দাবি করেছেন, এই টাকা তিনি নিজে দিয়েছেন। তবে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ নিশ্চিত করেছেন, টাকা দেয়া হয়েছে প্রশাসনের তহবিল থেকে।

এ বিভাগের আরো খবর