ভারতে বাংলাদেশি তরুণীকে নৃশংস যৌন নির্যাতনের ঘটনার ‘হোতা’ হিসেবে চিহ্নিত শাহবাজকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছে বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার সকালে শহরের রামপুরা এলাকার একটি আস্তানায় শাহবাজকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। শাহবাজ পালানোর চেষ্টা করে। এক পুলিশ কনস্টেবলকে গুলিও ছোড়ে। আত্মরক্ষায় পুলিশ তখন তার পা লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
পরে আহত শাহবাজকে গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে নেয়া হয় বলে বুধবার দুপুরে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন বেঙ্গালুরু (পশ্চিম) পুলিশের ডেপুটি কমিশনার শরনাপ্পা।
বাংলাদেশি তরুণীকে ধর্ষণ এবং নির্যাতনের ঘটনায় তাকে নিয়ে দুই নারীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করল ভারতীয় পুলিশ।
গত শুক্রবার পুলিশ হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন মামলায় আরও দুই অভিযুক্ত হৃদয় বাবু (টিকটক হৃদয়) ও রকিবুল ইসলাম সাগর। তখন পুলিশের গুলিতে তারাও আহত হন। তাদের গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে ভর্তি করে বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ।
বাংলাদেশি তরুণীকে ধর্ষণ ও নির্মম নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে ১৯ ও ২০ মে, পূর্ব বেঙ্গালুরুর কঙ্কনগরের একটি বাড়িতে। নির্যাতিতা ও অভিযুক্তরা পরিচিত। তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্যাতনের ৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও করে পরে তা অনলাইনে ছেড়ে দেয়া হয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে নামে পুলিশ।
শুরুতে আসাম, কেরালা রাজ্য পুলিশ তদন্ত করেছিল ঘটনাটি তাদের রাজ্যে ঘটেছে ধরে নিয়ে। তাদের পাশাপাশি তদন্তে নামে বাংলাদেশ পুলিশও।
বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়
বাংলাদেশের পুলিশ পরে এই তরুণীর পরিবারকে খুঁজে বের করে জানতে পারে তিনি বেঙ্গালুরুতে আছেন। বিউটি পার্লারে চাকরির আশ্বাস দিয়ে তাকে কয়েকমাস আগে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসে মো. বাবু শেখ নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু নির্যাতিতাকে যৌন ব্যবসায় নামানোর চেষ্টা করে বাবু ও তার সহযোগীরা। বাবু সাত মাস আগেই বেঙ্গালুরুতে এসে যৌন ব্যবসা চক্রে যোগ দিয়েছিলেন।
বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ জানায়, ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী বেঙ্গালুরুতে আসার আগে কেরালার কোঝিকোড় এবং হায়দরাবাদে বিউটি পার্লার ও স্পাতে কাজ করতেন। এক সময় বাবু শেখের সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে বিবাদ শুরু হয় মেয়েটির।
এরই মধ্যে হায়দরাবাদে যৌন ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বাবু শেখের স্ত্রী ও বোনকে। বাবুর ধারণা, তার স্ত্রী ও বোনকে ধরিয়ে দিয়েছে ওই তরুণী। এর কিছুদিন পর সব বিবাদ মিটিয়ে ফেলার কথা বলে মেয়েটিকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যায় বাবু।
সহযোগী হৃদয় বাবু, রকিবুল ইসলাম সাগর, হাকিলকে নিয়ে বাংলাদেশি ওই তরুণীকে ধর্ষণ এবং নির্মম নির্যাতন করে বাবু শেখ। তাদের সহযোগিতা করেন নসরথ ও কাজল নামে দুই তরুণী।
ঘটনার পর এক পরিচিত লোকের সহযোগিতায় কেরালায় পালিয়ে যান ধর্ষণের শিকার তরুণী। গত শুক্রবার কেরালা পুলিশের সহযোগিতায় নিয়ে বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। বেঙ্গালুরুতে সরকারি হাসপাতালে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা হয়।
পরদিন বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশের এক প্রেস নোটে জানানো হয়, ভাইরাল ভিডিও ক্লিপ দেখে ঘটনায় জড়িত এক নারীসহ পাঁচজনকে দ্রুত শনাক্ত করে আটক করা হয়েছে।