কলাবাগানে চিকিৎসক সাবিরা রহমান লিপির হত্যায় তার বাসার সাবলেটে এক নারী মডেলকে সন্দেহ করে মামলা করেছেন ভিক্টিমের মামাতো ভাই রেজাউল হাসান।
কলাবাগান থানায় মঙ্গলবার রাতে করা মামলার এজাহারে মডেলকে সন্দেহ করলেও আসামিদের অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারের একটি কপি এসেছে নিউজবাংলার হাতে। এতে রেজাউল উল্লেখ করেন, ৪৬ বছর বয়সী সাবিরা তার ফুফাতো বোন। তিনি রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাফি বিভাগের একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার প্রথম স্বামী ২০০৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর ২০০৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সাবিরা। উভয় পক্ষের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে তার।
এজাহারে বলা হয়েছে, সাবিরা পরিবারের সঙ্গে স্থায়ীভাবে বাস করতেন রাজধানীর গ্রিন রোডের একটি অ্যাপার্টমেন্টে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে কলাবাগান প্রথম লেনের ৫০/১ তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ওই বাসায় তিনটি রুম, যার একটিতে নিজে থাকতেন সাবিরা। অন্য দুটি রুমে সাবলেট হিসেবে দুই তরুণীকে ভাড়া দিয়েছিলেন।
ভাড়া দেয়া দুই রুমের একটিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করা একজন তরুণী থাকতেন। তিনি মডেলিংয়ের পাশাপাশি দারাজ অনলাইন শপিং সাইটেও কাজ করেন। ওই মডেল ফেব্রুয়ারি মাসে সাবিরার কাছ থেকে বাসা ভাড়া নেন।
এই রুম থেকেই উদ্ধার করা হয় চিকিৎসক সাবিরার মরদেহ। ছবি: নিউজবাংলাসাবলেটে অপর রুমের ভাড়াটে আরেক তরুণী গেল ঈদের পর থেকে তার গ্রামের বাড়ি থেকে আর ফেরেননি বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
ঘটনা সম্পর্কে রেজাউল এজাহারে উল্লেখ করেন, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি তার ফুফুর কাছ থেকে মুঠোফোনে সাবিরার মৃত্যুর বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, তার বোনের মরদেহ বিছানার ওপর উপুড় করে ফেলা আছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ পোড়া ও জায়গায় জায়গায় ফোসকা পড়া। তার পিঠের নিচের অংশে পাশাপাশি চারটি ধারালো অস্ত্রের ক্ষত। বাম চোয়ালের নিচে গলার বাম দিকে ধারালো অস্ত্রের দুটি গভীর আঘাত, যা জবাই করার মতো। বিছানার বেশ কিছুটা অংশ পোড়া ও মেঝেতে ছাই ছড়িয়ে ছিল।
বোন সাবিরাকে গত রোববার রাত ১০টা থেকে সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা আসামিরা হত্যা করে থাকতে পারে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন রেজাউল। হত্যার পর ঘটনার আলামত নষ্ট ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আগুন লাগানো হয়েছে বলে সন্দেহ তার।
ঘটনার সময় শুধু সাবলেটে ভাড়াটে মডেল তরুণী বাসায় অবস্থান করছিলেন বলে অভিযোগ রেজাউলের। তাই সন্দেহভাজন হিসেবে এজাহারে ওই মডেলের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি।
বাদীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে কলাবাগান থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলা নম্বর ০১/৯৪। এতে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটিতে হত্যা এবং আলামত নষ্ট করার ধারা আনা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করবেন কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক গোলাম রব্বানী।