বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারতে পাচারের ৭৭ দিন পর পালিয়ে এসে তরুণীর মামলা

  •    
  • ২ জুন, ২০২১ ১৪:০৮

হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় ১২ আসামির মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার তিনজনের একজন সহস্রাধিক নারীকে পাচারের কথা স্বীকার করেছেন।

টিকটক চক্রের মাধ্যমে ভারতে পাচার হওয়ার ৭৭ দিন পর পালিয়ে দেশে ফিরে একটি পাচার চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক তরুণী।

রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মঙ্গলবার রাতে মামলাটি করা হয়। রাতেই ওই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের একজন সহস্রাধিক নারীকে পাচারের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ।

মামলায় মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন ও আবদুল কাদের।

উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ জানান, ভিকটিমের সঙ্গে ২০১৯ সালে হাতিরঝিলে মধুবাগ ব্রিজে মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হৃদয় বাবুর পরিচয় হয়, যিনি সম্প্রতি ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

এই পুলিশ অফিসার বলেন, টিকটক স্টার বানাতে চেয়ে বা ভালো বেতনের চাকরির প্রস্তাব দিয়ে ভিকটিমকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেন হৃদয় বাবু। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জের একটি পার্কে ৭০-৮০ জনকে নিয়ে টিকটক হ্যাংআউট এবং ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে গাজীপুরে একটি রিসোর্টে ৭০০-৮০০ জন তরুণ-তরুণীকে নিয়ে পুল পার্টির আয়োজন করেন হৃদয় বাবু।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কুষ্টিয়ায় হ্যাংআউটের নামে ভুক্তভোগী তরুণীকে পাচার করা হয় বলে জানান ডিসি মো. শহীদুল্লাহ।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ায় বাউল লালন শাহ মাজারে আয়োজিত টিকটক হ্যাংআউটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে ভিকটিমকে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করেন হৃদয় বাবু। পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ার পর থেকে পালিয়ে দেশে ফেরা পর্যন্ত তার রোমহর্ষক করুণ কাহিনি কল্পনাকেও হার মানিয়েছে।

ভুক্তভোগী তরুণীর বরাতে ডিসি শহীদুল্লাহ জানান, ভারতে পাচারের পর ভিকটিমকে বেঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায় পর্যায়ক্রমে কয়েকটি বাসায় রাখা হয়। এ সময় ওই তরুণী ভারতে পাচার হওয়া আরও কয়েকজন বাংলাদেশি ভিকটিমকে দেখতে পান। যাদেরকে সুপার মার্কেট, সুপার শপ বা বিউটি পারলারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হয়েছে।

এই পুলিশ অফিসার জানান, বেঙ্গালুরুতে পৌঁছার কয়েক দিন পর ভিকটিমকে চেন্নাইয়ের ওইয়ো নামক হোটেলে ১০ দিনের জন্য পাঠানো হয়। অমানবিক শারীরিক ও বিকৃত যৌন নির্যাতনে সামান্য দয়া বা করুণাও দেখাননি পাচার চক্রের সদস্যরা। বরং কৌশলে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে কিংবা জোরপূর্বক বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে পরিবারের সদস্য, পরিচিতদের তা পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে জিম্মি করে রাখা হয়।

ডিসি শহীদুল্লাহ জানান, ভারতে পাচারের ৭৭ দিন পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে থাকা ভিকটিমের সহযোগিতায় হাতিরঝিল থানায় মামলা করা ভিকটিমসহ আরও দুইজন বাংলাদেশি তরুণী বেঙ্গালুরুর আস্তানা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় ১২ আসামির মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। বাকি সাতজন ভারতে অবস্থান করছেন। গ্রেপ্তার আসামিদের কাছ থেকে ভিকটিমকে পাচারের ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল, একটি ডায়েরি, চারটি মোবাইল ফোন ও একটি ভারতীয় সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

ডিসি শহীদুল্লাহ জানান, গ্রেপ্তার আসামি মেহেদী হাসান বাবু ভিকটিমসহ এক হাজারের বেশি নারী পাচারে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তিনি সাত-আট বছর ধরে মানব পাচারে জড়িত। তার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল ও ডায়েরিতে হৃদয় বাবু, সাগর, সবুজ, ডালিম ও রুবেলের ভারতীয় মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে।

পাশাপাশি তার কাছ থেকে উদ্ধার করা ডায়েরিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিওর ঘটনার ভিকটিমের কিছু কার্ড নম্বর এবং ভারতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভিকটিমের নাম ও মানব পাচারে জড়িত ব্যক্তিদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে।

ভারতীয় পাচারকারী চক্রের হাতে অন্তত ৫০০ বাংলাদেশি তরুণীকে তুলে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার অপর দুই আসামি মহিউদ্দিন ও আব্দুল কাদের।

এ বিভাগের আরো খবর