সিলেটে গত শনিবার ও রোববার সাত দফায় ভূমিকম্পের পর ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে আরও চারটি মার্কেট ১০ দিনের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। নির্দেশ মোতাবেক মার্কেটগুলো বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
এ নিয়ে রোববার ও সোমবার মোট ছয়টি মার্কেট বন্ধ করেছে নগর কর্তৃপক্ষ।
আগামী ৯ জুন পর্যন্ত এসব মার্কেট বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
নতুন করে বন্ধ করা মার্কেটগুলো হলো, নগরীর সমবায় ভবন, জিন্দাবাজারে মিতালী ম্যানশন, রাজা ম্যানশন ও সুরমা মার্কেট।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে রোববার বিকেলে নগরের ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো বন্ধের নির্দেশ দেন মেয়র আরিফুল। মেয়রের নির্দেশের পর এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে বৈঠকে বসেন মার্কেট কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা। পরে সোমবার থেকে ১০ দিনের জন্য মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
এর আগে রোববার বন্ধ করা হয় নগরের বন্দরবাজারের সিটি সুপার মার্কেট ও মধুবন সুপার মার্কেট।
রোববার বিকেলে নগরীর ২৫টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে নগর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ভবনও রয়েছে।
নগরীতে ২০১৯ সালের জরিপে ২৩টি ভবন আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ছিল। এর বাইরে শনিবার ভূমিকম্পে হেলে পড়া আরও দুটি ভবনকে নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়।
ওই ভবনগুলো পরিদর্শন করে মার্কেট বন্ধের পাশাপাশি আবাসিক ভবনের বাসিন্দাদেরও আগামী ১০ দিন অন্য জায়গায় থাকার পরামর্শ দেন সিটি মেয়র।
তিনি বলেন, ‘মার্কেট কিংবা দোকানপাট এক মিনিট বন্ধ থাকুক, তা আমিও চাই না। কিন্তু দফায় দফায় ভূমিকম্প হওয়াতে ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতেই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি এড়াতে এই নির্দেশনা। অন্তত আগে নিজে বাঁচুন এরপর ব্যবসার চিন্তা করুন।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে আছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উত্তর পাশের কালেক্টরেট ভবন-৩, জেলা রোডের সমবায় ব্যাংক ভবন, একই এলাকার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার সাবেক কার্যালয় ভবন, সুরমা মার্কেট, জিন্দাবাজারের মিতালী ম্যানশন, দরগাগেটের হোটেল আজমীর, টিলাগড় কালাশীলের মান্নান ভিউ ও পুরানলেনের ৪/এ কিবরিয়া লজ।
এর মধ্যে কিবরিয়া লজটি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়ে মেরামত করা হয়েছে।
একের পর এক ভূমিকম্পে শনিবার দিনভর আতঙ্কে ছিলেন সিলেট নগরীর বাসিন্দারা। রাতেও সে আতঙ্ক কাটেনি। সবশেষ রোববার ভোরে কম্পন অনুভূত হয় সিলেটে। রিখটার স্কেলে ভোরের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ২ দশমিক ৮। সময় ছিল ভোর ৪টা ৩৫।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, পাহাড়ি অঞ্চল ও ভূমিকম্পের জন্য হাই রিস্ক জোন সিলেট।
এর আগে শনিবার সকাল থেকে বারবার কেঁপে ওঠে সিলেট। তবে ঠিক কতবার ভূমিকম্প হয়েছে, তা নিয়ে দেখা দেয় বিভ্রান্তি। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয় তারা চারটির মাত্রা পেয়েছে।