বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পিটিয়ে হত্যা: অনুমোদন নেই সেই মাদক নিরাময় কেন্দ্রের

  •    
  • ২৬ মে, ২০২১ ২২:৪৫

যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাহাউদ্দিন বলেন, ‘অনুমোদনের আবেদন করা থাকলে অনেকে প্রতিষ্ঠান চালু করে। তারপর সরকার অনুমোদন দিয়ে থাকে।’ এ ধরনের কোনো আইন আছে কি না, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে এমন কোনো আইন নেই কিন্তু এভাবে হয়ে থাকে।’

চিকিৎসাধীন যুবক মাহফুজুর রহমানকে ‘পিটিয়ে হত্যার’ ঘটনা ঘটা সেই যশোর মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের সরকারি অনুমোদন নেই।

যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাহাউদ্দিন নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাহাউদ্দিন বলেন, ‘যশোর মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের কোনো অনুমোদন নেই। এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল।’

যদিও মঙ্গলবার তিনি বলেছিলেন এটি ছাড়াও আরও দুটি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন আছে।

বুধবার প্রথমে এই বক্তব্য অস্বীকার করলেও পরে কল রেকর্ডের কথা উল্লেখ করলে তিনি জানান তার বোঝাতে ভুল হয়েছিল।

অনুমোদন ছাড়া কীভাবে চলছে এই প্রতিষ্ঠান, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনুমোদনের আবেদন করা থাকলে অনেকে প্রতিষ্ঠান চালু করে। তারপর সরকার অনুমোদন দিয়ে থাকে।’

এ ধরনের কোনো আইন আছে কি না, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে এমন কোনো আইন নেই কিন্তু এভাবে হয়ে থাকে।’

জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলো পরিচালনার কথা জানালেও সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অন্তর্গত। আমাদের কোনো বিষয় নেই এখানে।’

তবে সিভিল সার্জন অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যৌথভাবে করার কথা থাকলেও সিভিল সার্জন অফিসকে জানানো হয় না। কেন জানানো হয়না এটার বিস্তারিত সিভিল সার্জন স্যার বলতে পারবেন।’

বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে মাদক নিরাময় কেন্দ্রটি

মাহফুজুর হত্যা মামলায় কেন্দ্রটির ২ পরিচালকসহ ১৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার থেকে এটি যশোর সদর থানার চাঁচড়া ফাঁড়ির হেফাজতে আছে।

কেন্দ্রটিতে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার পর এটি সিলগালা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাকিুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ফাঁড়ি থেকে পালাক্রমে সেখানে গিয়ে ডিউটি করছি। বর্তমানে এখানে যারা ভর্তি, শিগগিরই অভিভাবকদের ফোন দিয়ে তাদের অন্যত্র বা বাড়িতে নিয়ে যেতে বলব।

‘তবে ভেতরে ক্রাইম সিনসহ নানা আলামত থাকায় আমরা কাউকে ভেতরে যেতে দিচ্ছি না।’

বাহাউদ্দিন জানান, এখানে বর্তমানে ১৬ জন ভর্তি আছেন। তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হবে। না হয় বাড়িতে ফেরত পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রটি বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে আছে। চলমান মামলার ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্র বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

কী ঘটেছিল সেদিন

শনিবার বিকেলে শহরের রেল রোডের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাহফুজুরের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যান।

রোববার মাহফুজুরের বাবা মনিরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কল করে ছেলের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। তিনি আসার পর মরদেহে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশকে অভিযোগ দিলে কেন্দ্রটির মালিকসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠানটির ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে মাহফুজুরকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৪ জন হলেন কেন্দ্রটির পরিচালক পূর্ব বারান্দীপাড়ার মাসুম করিম ও বারান্দীপাড়া বটতলা এলাকার আশরাফুল কবির এবং রেজাউল করিম, মো. ওহেদুজ্জামান, ওহিদুল ইসলাম, আল শাহরিয়া, মো. শাহিন, ইসমাইল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, সাগর আলী, অহেদুজ্জামান সাগর, নুর ইসলাম, হৃদয় ওরফে ফরহাদ ও মো. আরিফুজ্জামান।তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

মাহফুজুর হত্যা মামলায় কেন্দ্রটির তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

যশোর জেলা আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শাহাদৎ হোসেন সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় তাদের জবানবন্দি নেন।

কোর্ট পরিদর্শক মাহাবুবুর রহমান জানান, চৌগাছার বিশ্বাসপাড়ার রিয়াদ, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের শাহিনুর রহমান ও যশোর শহরের রেজাউল করিম রানা জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য ১১ আসামির রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ২৭ মে দিন ঠিক করেছেন বিচারক।

এ বিভাগের আরো খবর