বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিতু হত্যায় জবানবন্দি দেননি বাবুল

  •    
  • ১৭ মে, ২০২১ ১৫:০৫

ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। সে সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল আকতার। এরপর তিনি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। পাঁচ বছর পর মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করে প্রধান আসামি করেন বাবুলকে।

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার পাঁচ বছর পর গ্রেপ্তার সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার রিমান্ড শেষে আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক।

পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে রোববার দুপুরে আড়াইটার দিকে মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহানের আদালতে বাবুলকে তোলা হয়। তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের খাস কামরায় নেয়া হয় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণে। তবে তিনি জবানবন্দি দেবেন না বলে জানান।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাব উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, জবানবন্দি দেয়ার জন্য বাবুল আকতারকে সরাসরি বিচারকের খাস কামরায় নেয়া হয়েছিল। সেখানে তিনি চার ঘণ্টা অবস্থান করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। এরপর আমরা কোনো রিমান্ডের আবেদন করিনি। পরবর্তীতে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে গোপনীয়তা অবলম্বন করে বাবুল আকতারকে আদালতে আনা হয়। পরে তাকে জবানবন্দি দেয়ার জন্য সময় দেয়া হয়।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দি দিবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বাবুল আকতারকে তিন ঘণ্টা সময় দিয়েছিল আদালত। পরে বাবুল আকতার আদালতকে জানান, তিনি জবানবন্দি দিবেন না। এরপরই আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

দুপুর দুইটা ৪৫ মিনিটের দিকে বাবুল আকতারকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহানের খাস কামরা থেকে বের করা হয়। বের হওয়ার সময় বাবুল আকতারকে উৎফুল্ল দেখা যায়। গত বুধবার যখন বাবুল আকতারকে আদালতে তোলা হয় তখন তিনি বিমর্ষ ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ পাহারায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এই সময় ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার ছিল আদালত প্রাঙ্গনে।

এদিকে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় বাবুল আকতার তার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ পাহারায় থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি।

এই ব্যাপারে বাবুল আকতারের আইনজীবী আরিফুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিকরা) দেখেছেন বাবুল আকতারকে কীভাবে আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা তার সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। তাই আমরা কিছুই বলতে পারছি না।’

ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। সে সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল আকতার।

হত্যার পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে তিনি মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

এ মামলায় সে বছরের ২৬ জুন মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম ও মো. আনোয়ার নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর এই হত্যায় বাবুলের সম্পৃক্ততা নিয়ে গণমাধ্যমে নানা তথ্য উঠে আসে। তবে তদন্ত আর আগায়নি। তবে একপর্যায়ে বাবুল পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অব্যাহতি নিতে তাকে বাধ্য করা হয়।

বাবুল দোষী হলে তাকে গ্রেপ্তার না করে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সে সময়ই প্রশ্ন উঠে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা আর দেয়া হয়নি।

তবে পাঁচ বছর পর এবার ঈদের আগে চমক দেখায় পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই। হঠাৎ বাবুলকে ঢাকা থেকে ডেকে নেয়া হয় চট্টগ্রাম। মিতুর বাবাকেও নেয়া হয়।

পিবিআই বাবুলের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এর পরেই বাবুলকে আসামি করে মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।।

১২ মে পাঁচলাইশ থানায় করা মামলায় বলা হয়, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে।

সেদিনই বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে রিমান্ডে পাঠান।

এ মামলার আসামি আরও সাতজন। এর মধ্যে দুই নম্বর আসামি মুসাসহ পলাতক রয়েছেন তিনজন। অন্য ‍দুজন হলেন তিন নম্বর আসামি এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাইয়্যা এবং ছয় নম্বর আসামি খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু ওরফে কসাই কালু।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমাও বলেন, মিতু হত্যার প্রথম মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনজন। তারা হলেন মোতালেব মিয়া অরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন ও শাহজাহান মিয়া। আর নতুন মামলা হওয়ার পর বাবুল আকতার ও সাইদুল ইসলাম সিকদার গ্রেপ্তার হয়েছেন।

মুসাসহ পলাতক তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান সন্তোষ কুমার।

এ বিভাগের আরো খবর