চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. জাফর এবং মো. আবু সৈয়দ। এর মধ্যে মো. জাফর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রধান সমন্বয়ক ফারুক আহমেদের করা মামলার তালিকাভুক্ত আসামি।
সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হলেও গণমাধ্যমকে মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ।
বাঁশখালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সোমবার রাতে উপজেলার গন্ডামারা একালায় অভিযান চালিয়ে মো. জাফর এবং মো. আবু সৈয়দকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তার দুই জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
গ্রেপ্তার দুইজনের কেউ ই শ্রমিক নন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গত ১৭ এপ্রিল বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। আহত হন অর্ধশতাধিক। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ওই দিন বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছিলেন বাঁশখালী থানার ওসি আজিজুল ইসলাম।
তিনি জানিয়েছিলেন, বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বেশ কিছু দাবিতে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকরা সকাল থেকে আন্দোলন করছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সেখান গিয়ে তাদের ওপর গুলি চালায়।
তিনি বলেন, পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বাঁশখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রাশেদ দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন। পাওয়ার প্লান্টের চিফ কো-অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ প্ল্যান্টে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে আলাদা দুটি মামলা করেন।
বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে ও চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো ও এইচটিজির মধ্যে চুক্তি হয়। ২০১৭ সাল থেকে গণ্ডমারা এলাকায় প্রায় ছয় শ একর জমিতে আড়াই শ কোটি ডলার ব্যয়ে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।
চুক্তি হওয়ার পর থেকেই গ্রামবাসীদের একটি পক্ষ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করেন পরিবেশ দূষিত হওয়ার কথা বলে। আরেকপক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষ নেয়।
এর জেরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তখন নিহত হন চার গ্রামবাসী। আহত হয় পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন। এ ঘটনার পাঁচ বছর পর ফের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায়।