মাদারীপুরের শিবচরে বাল্কহেডকে ধাক্কা দিয়ে স্পিডবোট ডুবে ২৬ প্রাণহানির ঘটনায় বোটের মালিক-চালকসহ চারজনের নামে মামলা হয়েছে।
শিবচর থানায় সোমবার গভীর রাতে নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে মামলাটি করেন উপপরিদর্শক লোকমান হোসেন। তাতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে আহত বোটচালককে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ উদ্দিন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, অন্য আসামিরা হলেন ঘাটের ইজারাদার শাহ আলম এবং বোটের মালিক চান্দু মোল্লা ও মো. রেজাউল। তারা এখন পলাতক।
বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথের কাঁঠালবাড়ী ঘাট এলাকায় সোমবার সকালে দাঁড়িয়ে থাকা বাল্কহেডে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায় যাত্রীবোঝাই স্পিডবোট। সেখান থেকে একে একে উদ্ধার করা হয় শিশুসহ ২৫ জনের মরদেহ। হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান আরও একজন। জীবিত উদ্ধার করা হয় স্পিডবোটের চালকসহ পাঁচজনকে।
শিমুলিয়ার নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেন সোমবার বিকেলে জানান, স্পিডবোটটির কোনো নিবন্ধন ছিল না। এর চালকের ছিল না দক্ষতার সার্টিফিকেট।
তিনি বলেন, উল্টে যাওয়া স্পিডবোটটির নিবন্ধন ছিল না। চালকের যোগ্যতা সনদও নেই। এই নৌরুটের বেশির ভাগ নৌযানের একই অবস্থা।
আহত চালক শাহ আলমকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাকে মামলায় আটক দেখিয়েছে পুলিশ।
থানার ওসি মিরাজ বলেন, স্পিডবোটটি যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে কাঁঠালবাড়ীর কাছাকাছি পৌঁছালে ঘাটে নোঙর করে রাখা বাল্কেহেডের পেছনে এর ধাক্কা লাগে।
ধারণা করা হচ্ছে, চালক নিয়ন্ত্রণ হারানোয় স্পিডবোটটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায় নদীতে।
লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার পাশাপাশি নৌপথগুলোতে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারপরও যাত্রী নিয়ে নদীতে নামে ওই স্পিডবোট।
বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে মাওয়া নৌ-ফাঁড়ির পরিদর্শক সিরাজুল কবির দাবি করেন, স্পিডবোটটি শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যায়নি। লকডাউনের শুরু থেকে অসাধু একটি চক্র ঘাট এলাকাসংলগ্ন চর থেকে অবৈধভাবে যাত্রী তুলে চলাচল করছিল। সকালে ওই স্পিডবোটটি এমনই একটি চর থেকে ছেড়ে গেছে।
শিবচর থানার ওসি মিরাজ জানান, নিহত ২৬ জনের পরিচয় শনাক্ত শেষে সোমবার রাতেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।