শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌপথে চলা প্রায় ৪০০ স্পিডবোট অনুমোদন ছাড়াই চলছে বলে জানিয়েছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে ঘাট ইজারাদারের দাবি, স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই চালানো হচ্ছে স্পিডবোটগুলো।
সরেজমিনে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,পদ্মা নদীর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ও শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি রুটে প্রায় ৪০০ স্পিডবোট চলছে। অল্প সময়ের মধ্যে নদী পাড়ি দিতে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠে পড়েন এসব স্পিডবোটে। লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা না থাকায় অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকরাও চালাচ্ছে স্পিডবোট।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই চলছে স্পিডবোটগুলো। প্রতিটি বোটে ২২ জন যাত্রী পারাপারের কথা থাকলেও উঠানো হচ্ছে ৩০ জনের বেশি। প্রত্যেক যাত্রীর জন্য লাইফ জ্যাকেট থাকা বাধ্যতামূলক হলেও অধিকাংশ স্পিডবোটে ২-৩ টির বেশি লাইফ জ্যাকেট নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী জানান, জনপ্রতি ১৫০ টাকা ভাড়া আদায় করার কথা থাকলেও আদায় করা হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা।
বিআইডব্লিউটিএর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্পিডবোট দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ জন।
বিআইডব্লিউটিএর কাঁঠালবাড়ী ঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) হিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এই নৌপথে বিআইডব্লিউটিএ কোনো স্পিডবোট চলার অনুমতি দেয়নি। তবুও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হয়, তাই আমরা তাদের সেভাবে কিছু বলি না। রাতে স্পিডবোট চলাচলে ঝুঁকি তো আছেই, রয়েছে নিষেধাজ্ঞাও। কিন্তু তারা এসব মানছে না।’
শিমুলিয়া ঘাটের ইজারাদার ও লৌহজংয়ের মেদেনীমণ্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খানের দাবি, স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই স্পিডবোট চলাচল করছে।
তিনি বলেন, 'প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই স্পিডবোট চলাচল করছে। প্রশাসনের অনুমতি না থাকলে কখনোই এভাবে স্পিডবোট চলতে পারত না। প্রত্যেক স্পিডবোট চালকের ন্যূনতম দুই বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফিটনেসের বিষয়টি আমরা নিয়মিত তদারকি করি।’
এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক বলেন, ‘স্পিডবোট চলাচলের অনুমতির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা হয়েছে। ডিজি শিপিংয়ের মাধ্যমে লাইসেন্স দিয়ে তারা স্পিডবোট চলাচলের অনুমতি দেবেন। চালকদের প্রশিক্ষণ, স্পিডবোটের ফিটনেসসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।
মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় চাইলে তারা যেকোনো সাহায্য করবেন।