বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্পিডবোটডুবি: মা-বাবা-বোনকে খুঁজছে মিম

  •    
  • ৩ মে, ২০২১ ১৫:২৭

হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, মিম শুধু তার বাবার ফোন নম্বর জানত। অন্য কোনো স্বজনের ফোন নম্বর জানে না বলে তার গ্রামের বাড়িতে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। আতঙ্কিত শিশুটি আর কোনো তথ্য দিতে পারছে না। বাবা-মা ও বোনদের মরদেহ শনাক্ত করার জন্য পুলিশ তাকে আবার ঘটনাস্থলে নিয়ে যাবে।

মাদারীপুরের শিবচরে বাল্কহেডে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যাওয়া স্পিডবোটে ছিল আট বছরের মিম। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নেয়া হয়েছে শিবচরের পাচ্চর রয়েল হাসপাতালে।

হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় মিমের সঙ্গে। সে জানায়, বাবা-মা ও ছোট দুই বোনের সঙ্গে স্পিডবোটে করে খুলনা যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার পর তাদের খুঁজে পায়নি সে। হাসপাতালে এসে শুনেছে, বাবার মরদেহ পাওয়া গেছে। অন্যদের খবর এখনও সে পায়নি।

ডা. মিজানুর জানান, মিম শুধু তার বাবার ফোন নম্বর জানত। অন্য কোনো স্বজনের ফোন নম্বর জানে না বলে তার গ্রামের বাড়িতে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। আতঙ্কিত শিশুটি আর কোনো তথ্য দিতে পারছে না। বাবা-মা ও বোনদের মরদেহ শনাক্ত করার জন্য পুলিশ তাকে আবার ঘটনাস্থলে নিয়ে যাবে।

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর এই হাসপাতালে আনা হয়েছে পাঁচজনকে। এর মধ্যে তাহের মীর নামের একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈরে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন পিরোজপুরে মো. মাহিন, রেহানা বেগম ও গোপালগঞ্জের মেশকাত শেখ।

এদিকে, ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন।

তিনি বলেন, আর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো এখন শনাক্ত ও হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

ওসি জানান, স্পিডবোটের চালক শাহ আলমকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারের পর প্রথমে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শাহ আলমের কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। শুধু জানা গেছে যে তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জে।

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথের কাঁঠালবাড়ী ঘাট এলাকায় সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মাদারীপুর নৌপুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক ও শিবচর থানার ওসি মিরাজ জানান, লকডাউনের নির্দেশনা অমান্য করে স্পিডবোটচালক যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া থেকে আসছিলেন। তবে মাওয়া নৌ-ফাঁড়ির পরিদর্শক সিরাজুল কবিরের দাবি, ঘাট থেকে নয়, কাছের চর থেকে যাত্রী তুলে যাচ্ছিল এটি।

শিবচর থানার ওসি মিরাজ বলেন, স্পিডবোটটি যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে কাঁঠালবাড়ী ঘাটের কাছাকাছি পৌঁছালে ঘাটে নোঙর করে রাখা বাল্কহেডের পেছনে এর ধাক্কা লাগে।

ধারণা করা হচ্ছে, চালক নিয়ন্ত্রণ হারানোয় স্পিডবোটটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায় নদীতে।

কাঁঠালবাড়ী নৌ-পুলিশের ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর আমরা ২৬ জনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। কতজন বোটে ছিল, তা জানা যায়নি।

‘সাধারণত স্পিডবোটে ২০ জনের মতো যাত্রী ওঠে। এই স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। নদীতে আরও কেউ নিখোঁজ আছে কি না, তা জানতে উদ্ধারকাজ চলছে।’

লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার পাশাপাশি নৌপথগুলোতে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারপরও যাত্রী নিয়ে নদীতে নামে ওই স্পিডবোট।

বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে মাওয়া নৌ-ফাঁড়ির পরিদর্শক সিরাজুল কবির দাবি করেন, স্পিডবোটটি শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যায়নি। লকডাউনের শুরু থেকে অসাধু একটি চক্র ঘাট এলাকাসংলগ্ন চর থেকে অবৈধভাবে যাত্রী তুলে চলাচল করছিল। সকালে ওই স্পিডবোটটি এমনই একটি চর থেকে ছেড়ে গেছে।

এ বিষয়ে আরও তথ্য জানতে শিমুলিয়া ঘাটের একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর