বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লাউয়াছড়ার বনে আগুন দিল কে

  •    
  • ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ২৩:৩৩

লাউয়াছড়া বনের পশুপাখির নিরাপদ আবাসস্থলে আগুন লেগে পুড়ে গেছে প্রায় সাত একর জায়গা। এর আগে লাউয়াছড়া বনের আলোচিত স্থানে অনেকবার আগুন লেগেছে। ঘন ঘন বনে আগুন লাগার ঘটনাকে নাশকতা বলেই মনে করছেন লোকজন। আর তাতে বন বিভাগের লোক জড়িত বলে সন্দেহ অনেকের।

লাউয়াছড়ার জাতীয় উদ্যানে আগুন লেগে পুড়ে গেছে বনাঞ্চলের একাংশ। শনিবার দুপুরে হঠাৎ আগুনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফায়ার সার্ভিস দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। আগুনের উৎস নির্ণয়ের পাশাপাশি এখন চলছে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কাজ।

ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে কমিটি। এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা নিশ্চিত হতে কাজ করবেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। বার বার বনাঞ্চলে আগুনের ঘটনায় বন বিভাগের কর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সহকারী বন সংরক্ষকের দায়িত্বে থাকা মির্জা মেহেদী সারোয়ারকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্য হলেন বন মামলা পরিচালক মো. জুলহাস। তাদের দুই কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

স্থানীয় লোকজন জানান, শনিবার বেলা ১২টার দিকে বনে আগুন লাগে। পথচারীরা দেখে বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। জঙ্গলের পাশে ছিল না কোনো জলাধার। তাই দূর থেকে গাড়িতে পানি ভরে নিয়ে আসতে হয়। অন্যদিকে বনের ভেতর রাস্তা না থাকায় ঢুকতে পারছিল না গাড়ি। এ সময় বনবিভাগের অনেক কর্মী রাস্তায় বসে থাকলেও আগুন নেভাতে তৎপর হননি।

আগুনের ঘটনায় বন টহল দলের (সিপিজি) সদস্য মহসিন মিয়া ও বন প্রহরী মুহিতুল ইসলামের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন লোকজন। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দল দ্রুত ঘটনাস্থলে আসলেও তারা সেখানে পৌঁছেন ঘণ্টা খানেক পর। তাদের সহযোগিতায় একটি চক্র বনে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে।

লাউয়াছড়া বনের প্রায় সাত একর জায়গা পশুপাখির নিরাপদ আবাসস্থল। আগুনে সেখানকার গাছপালাসহ অনেক পাখির বাসা পুড়ে গেছে। এর আগেও লাউয়াছড়া বনের আলোচিত স্থানে অনেকবার আগুন লেগেছে। ঘন ঘন বনে আগুন লাগার ঘটনাকে নাশকতা বলেই মনে করছেন লোকজন।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের তিন নম্বর গেট বাঘমারা ক্যাম্প ও লাউয়াছড়া স্টুডেন্ট ডরমেটরির বিপরীত স্থানের বনে আগুন লাগে। যেখানে বনবিভাগের নতুন করে ১৫ দশমিক ৮০ একর জায়গাতে সামাজিক বনায়ন করার কথা। এ বনে রয়েছে হরিণ, বন মোরগ, বন্য শুকর, বানরসহ অনেক প্রাণী।

বাঘমারা ক্যাম্পের ইনচার্জ ফরেস্ট গার্ড মোতাহের হোসেন নিউবজাংলাকে বলেন, ‘বাগান সৃজনের কথা শুনে দুষ্টচক্র এমন কাজ করতে পারে। বাগান সৃজন হলে পশু পাখির খাদ্যের সংকুলান হবে। এর আগেও এখানে আগুন দেয়া হয়েছে, তবে এ রকম বড় ছিল না।’

কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আশেপাশে পানি না থাকায় সমস্যা হয়েছে। একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে আগুন লেগেছিল। তা নেভানো হয়। বনে কীভাবে আগুন লেগেছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না, তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে।’

১৯৯৬ সালে ১২৫০ হেক্টরের লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বনবিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৯ প্রজাতির সাপ, ১৮ প্রজাতির লিজার্ড, ২ প্রজাতির কচ্ছপ, ২২ প্রজাতির উভচর, ২৪৬ প্রজাতির পাখি ও অসংখ্য কীট-পতঙ্গ রয়েছে এ বনে। এ ছাড়াও এখানে বিরল প্রজাতির উল্লুক, মুখপোড়া হনুমান, চশমাপড়া হনুমানের দেখা পাওয়া যায়।

এ বিভাগের আরো খবর