বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদ্যুৎকেন্দ্রে ফের কাজ শুরু: আসামি ‘খুঁজছে’ পুলিশ

  •    
  • ২০ এপ্রিল, ২০২১ ১৯:৩১

বাঁশখালির ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের কেউ এখনও মামলা করেনি। বাঁশখালী থানার ওসি সফিউল বলেন, পাঁচ শ্রমিকের নিহতের ঘটনাটি পুলিশের পক্ষ থেকে করা মামলায় উল্লেখ আছে। মামলার অধীনে ওই ঘটনা তদন্ত করা হবে।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বিদ্যুৎকেন্দ্রে রক্তক্ষয়ী ঘটনার কয়েকদিন পরে সরকারি কাজে বাঁধা ও হামলার অভিযোগে পুলিশ দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছে। কিন্তু কেউ এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। বাহিনীর সদস্যরা কাউকে খুঁজে পাচ্ছে না।

একই অবস্থায় বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের করা মামলার। ওই মামলায় আনা হয়েছে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ। অজ্ঞাতপরিচয় দেড় হাজারের পাশাপাশি এজাহারে নাম আছে ২২ জনের। কিন্তু পুলিশের খাতায় সবাই পলাতক।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় এই প্রতিবেদন লেখার ৬৪ ঘণ্টা আগে হয় ওই দুটি মামলা। এস আলমের বিদ্যুৎকেন্দ্রে রক্তক্ষয়ী ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গ্রেপ্তার আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই মামলা করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।

তবে পুলিশ বলছে, আসামিদের ধরতে তারা মাঠে আছেন। চলছে অভিযান। জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

এ অবস্থার মধ্যেই বন্ধ থাকার তিন দিন পর মঙ্গলবার সকালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ আবার শুরু হয়েছে। স্থানীয় কিছু শ্রমিকের পাশাপাশি কাজে যোগ দিয়েছেন চীনা শ্রমিকরা।

বকেয়া বেতন পরিশোধসহ নানা দাবিতে গত শনিবার আন্দোলনে নামেন এস আলমের বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকরা। সেখানে পুলিশ গুলি চালালে পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। আহত হন অন্তত ২০ জন।

ঘটনার পর থেকে পুলিশ দাবি করছে, শ্রমিকরা হামলা চালালে আত্মরক্ষায় পুলিশ সদস্যরা গুলি করে। আর শ্রমিকদের দাবি, বিনা উসকানিতে পুলিশ তাদের দিকে গুলি চালিয়েছে।

পুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষের মামলার পর আতঙ্ক বিরাজ করছে শ্রমিকদের মাঝে। ভয়ে অনেকেই কথা বলতে চাইছেন না। এমনকি যারা পরিবারের সদস্য হারিয়েছে তারা কেউ মামলা করেননি।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল বলেন, পাঁচ শ্রমিকের নিহতের ঘটনা পুলিশের পক্ষ থেকে করা মামলায় উল্লেখ আছে। মামলার অধীনে ঘটনা তদন্ত করা হবে।

গুলিতে নিহত শ্রমিক আহমদ রেজার চাচাতো ভাই মোহাম্মদ মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‍মামলা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা আলোচনা করছে। রেজার মা অসুস্থ বলে সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগছে।

তিনি আরও বলেন, মামলা থানায় করা হবে নাকি আদালতে, সেটা নিয়েও পরিবারে আলোচনা চলছে। কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে মামলা করা হবে।

দুটি মামলারই তদন্ত করছে বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল। তিনি বলেন, ‘আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। পাশাপাশি অনেককেই নজরদারিতে রেখেছি। সময় হলেই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’

বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ ফের শুরু

শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে নির্মাণকাজ ফের চালু হলে কাজে যোগ দিতে শুরু করেন স্থানীয় শ্রমিকরা। সে সময় সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে যান বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, মঙ্গলবার কিছু শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছে। তারা স্থানীয়। পাশাপাশি চীনা শ্রমিকরাও কাজ করছেন।

এস আলম গ্রুপের ভূসম্পত্তি বিভাগের প্রধান মোস্তান বিল্লাহ আদিল বলেন, চট্টগ্রামের বাইরের শ্রমিকরা চলে গেছেন। আশপাশের অনেক শ্রমিক আগে এখানে কাজ করতেন। তাদের দিয়েই আবার কাজ শুরু করা হয়েছে।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো ও এইচটিজির চুক্তি হয়।

গণ্ডমারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমিতে আড়াইশ কোটি ডলার ব্যয়ে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে।

চুক্তি হওয়ার পর থেকেই গ্রামবাসীদের একটি পক্ষ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করেন পরিবেশ দূষিত হওয়ার কথা বলে। আরেকপক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষ নেয়।

এর জেরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তখন নিহত হন চার গ্রামবাসী। আহত হয় পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন। এ ঘটনার পাঁচ বছর পর ফের গেল শনিবার হতাহতের ঘটনা ঘটে বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায়।

এ বিভাগের আরো খবর