চট্টগ্রামের বাঁশখালীতের নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক বিক্ষোভের সময় ২৭০টি গুলি ছুড়েছে পুলিশ।
বাঁশখালী থানায় করা মামলায় এ তথ্য উল্লেখ করেছে পুলিশ।
বাঁশখালী থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদুজ্জামান বেগ দুই থেকে আড়াই হাজার জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন।
বিক্ষোভ ঠেকাতে কী পরিমাণ গুলি ছুড়েছে পুলিশ; জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবীর বলেন, এজাহারে উল্লেখ আছে ২৭০টি গুলি চালিয়েছে পুলিশ।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মালিক শিল্পগোষ্ঠী এস আলমের হয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের চিফ কো অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং এক হাজার ৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছেন।
প্রকল্পের পক্ষে করা মামলায় প্রকল্পের মালামালে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের পক্ষে করা মামলায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ তোলা হয়েছে। মামলা দুটির তদন্ত করছে বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম।
এ ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি একটির প্রধান চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি (ক্রাইম) জাকির হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তে শেষে মরদেহগুলো বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে একজন বাঁশখালীর গণ্ডামারার। এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।
শনিবার সকালে বাঁশখালীর বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ২০ জন।
বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে ও চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো ও এইচটিজির মধ্যে চুক্তি হয়। ২০১৭ সাল থেকে গণ্ডমারা এলাকায় প্রায় ছয় শ একর জমিতে আড়াই শ কোটি ডলার ব্যয়ে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।
চুক্তি হওয়ার পর থেকেই গ্রামবাসীদের একটি পক্ষ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করেন পরিবেশ দূষিত হওয়ার কথা বলে। আরেকপক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষ নেয়।
এর জেরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তখন নিহত হন চার গ্রামবাসী। আহত হয় পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন। এ ঘটনার পাঁচ বছর পর ফের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায়।