চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ শনিবার গভীর রাতে মামলা দুটি করেছে।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল কবির নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বাঁশখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রাশেদ দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন। পাওয়ার প্লান্টের চিফ কো-অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ প্ল্যান্টে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ ১ হাজার ৪০ থেকে ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শনিবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ২০ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শফিউর রহমান মজুমদার জানিয়েছিলেন, সংঘর্ষে আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে গুলিবিদ্ধ ৪ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে একজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্যের ও পুলিশের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চীনা প্রতিষ্ঠান সেফকো ও এইচটিজির চুক্তি হয়। ২০১৭ সাল থেকে গণ্ডমারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমিতে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।
চুক্তি হওয়ার পর থেকেই গ্রামবাসীদের একটি পক্ষ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছে। তাদের বক্তব্য, এতে গ্রামের পরিবেশ দূষিত হবে। আরেক পক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষ নেয়।
এর জেরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তা নিয়ন্ত্রণে যায় পুলিশ। তখন নিহত হন চার গ্রামবাসী। আহত হয় পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন।
এ ঘটনার পাঁচ বছর পর আবারও রণক্ষেত্র হলো বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা।