সিলেটের গোলাপগঞ্জে মন্দিরে এক তরুণীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে যে পুরোহিতের বিরুদ্ধে তিনি এর আগেও কয়েকজন নারীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
যদিও স্থানীয় কয়েকজনের দাবি, মন্দিরের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পুরোহিতকে ফাঁসানো হয়েছে।
পুরোহিতকে বৃহস্পতিবারই আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে শুক্রবার পর্যন্ত তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।অভিযুক্ত পুরোহিতের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের কালাকোনা গ্রামে শ্রী শ্রী গিরিধারী জিউ মন্দিরের বৈষ্ণবের (পুরোহিত) দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এলাকাবাসী তাকে বাবাজি বলে ডাকতেন।গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী শুক্রবার বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুইজনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার মামলা করেন বাঘা এলাকার এক তরুণী। মামলার প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এরইমধ্যে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যজন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।ওসি বলেন, ‘এজাহার অনুসারে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে বুধবার। আর মামলা হয় বৃহস্পতিবার। এই সুযোগে এক আসামি পালিয়ে যায়। তাকে গ্রেপ্তারে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।’মন্দিরের জমি সংক্রান্ত বিরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের কথা আমিও শুনেছি। তবে ওই পুরোহিতের চারিত্রিক সমস্যা আছে বলেও এলাকার অনেকে জানিয়েছেন। আরও কয়েকজন নারীকে তিনি কুপ্রস্তাব দেন। এমনকি যে তরুণী মামলা করেছেন তার বড় বোনকেও ওই পুরোহিত কুপ্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। সবকিছুই আমরা তদন্ত করে দেখছি।’মামলায় বলা হয়, ধর্মীয় শিক্ষা লাভের জন্য এলাকার তরুণ-তরুণীরা মন্দিরে যেতেন। বুধবার সন্ধ্যায় মন্দিরের পাশের বাড়ির এক তরুণী ওই মন্দিরে যান।এজাহারে তরুণী অভিযোগ করেন, ওই রাতে পুরোহিত ও তার সহযোগী তরুণীকে জরুরি কাজের কথা বলে মন্দিরের পাশে নিয়ে যান। সেখানে তার মুখে চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তারা। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশ এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন।জমি সংক্রান্ত বিরোধ থেকে পুরোহিতকে ফাঁসানোর অভিযোগ যারা তুলেছেন তারা কেউ পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। তাদের কয়েকজন নিউজবাংলাকে জানান, ২০১৯ সাল থেকে এই মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। স্থানীয় এক ব্যক্তি ওই মন্দিরের জায়গা তার দাবি করে মন্দির নির্মাণ কাজেও বাধা দেন। এর পেছনে প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতা সম্পৃক্ত বলেও অভিযোগ তাদের।বাঘা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সাইয়্যাদ আহমদ সুহেদ বলেন, ‘মন্দিরের জমি নিয়ে অনেক আগে থেকেই ঝামেলা চলছিল। এ বিষটি একাধিকবার আমি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।’