হেফাজতের ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জে তাণ্ডবের ঘটনায় সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বুধবার নিশ্চিত করেছে র্যাব।
র্যাব-১১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, নাশকতা, পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলার আসামি ইকবাল।
তিনি সিটির ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ডাকা হরতালে গত ২৮ মার্চ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড মোড় থেকে শিমরাইল এলাকা পর্যন্ত সহিংসতা চালায় সংগঠনের কর্মীরা। এ ঘটনায় পুলিশ ও র্যাব ছয়টি মামলা করে।
মামলায় পুলিশের ওপর হামলা ও হত্যার চেষ্টা, সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধা, জনগণের জানমালের ক্ষতি, নাশকতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সহিংসতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন, তার ছেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, আবদুল হাই রাজু, বিলুপ্ত মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, মহানগর ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবুসহ থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকে।
পুলিশের করা মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৩৬ জনের। এ ছাড়া তিন হাজারের বেশি অজ্ঞাতপরিচয় আসামি রাখা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, প্রাথমিকভাবে পুলিশের তদন্তে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ জন্য মামলায় বিএনপি নেতাদের নাম উল্লেখ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, হেফাজতের নেতাদের পুরো পরিচয় জানা না গেলেও মামলায় তাদেরও আসামি করা হয়েছে। হেফাজতের অনেক কর্মীর নামও রয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, রোববার হেফাজতের ডাকা হরতালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত ছিল হরতাল সমর্থকদের দখলে। এদিন তারা ১৮টি যানবাহনে আগুন দেয়। নির্বিচারে চালায় গাড়ি ভাঙচুর। দফায় দফায় বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে পুলিশ-সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।