চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় হেফাজতের মিছিল থেকে চালানো হামলায় আহত আওয়ামী লীগ নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মধ্যরাতে মৃত্যু হয়েছে মো. মুহিব্বুল্লাহর।
মুহিব্বুল্লাহ রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কি নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টের একটি কক্ষে শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান নেয়া হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় লোকজন।
সে সময় তাদের অনেকেই ফেসবুকে লাইভে এসে মামুনুল ও ওই নারীকে রিসোর্টে আসার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের প্রশ্নের মুখে মামুনুল বলতে থাকেন, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে শরিয়ত মোতাবেক তারা বিয়ে করেছেন। এখন রিসোর্টে ঘুরতে এসেছেন।
এরপর পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর মামুনুল ও তার সঙ্গে থাকা নারীকে ছেড়ে দেয়। এরই মধ্যে ফেসবুক লাইভ দেখে স্থানীয় হেফাজত কর্মী-সমর্থকরা ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে মামুনুলকে বের করে নেন।
রিসোর্টে মামুনুলের সঙ্গে ওই নারীকে পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জেলার হেফাজত সমর্থকরা ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভে নামেন।
ওসি মাহবুব বলেন, ওই রাতে রাঙ্গুনিয়ার কোদালা ইউনিয়নে হেফাজতের মিছিলে ছিল বিএনপির লোকজনও। মিছিল থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব মিল্কি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মুহিব্বুল্লাহ, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলদার আজম লিটনের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে আহত তিনজনের মধ্যে মুহিব্বুল্লার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম শহরের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই বুধবার রাতে তিনি মারা যান।
বুধবার রাত সাড়ে বারোটার দিকে নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, উপজেলা বিএনপি নেতা ইউনুস মনিরের নেতৃত্বে স্থানীয় হেফাজত ও বিএনপি নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হয়ে ওই মিছিল বের করে। মিছিলটি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে শুরু হয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত যায়। এ সময় ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মিছিল থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর।
ওসি জানান, হামলার দুই দিন পর সোমবার সকালে স্থানীয় যুবলীগ নেতা আব্দুল জব্বার ও পুলিশ বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপি নেতা ইউনুস মনিকে প্রধান আসামি করে দুটি মামলা করে। দুই মামলায় ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। দুই মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।