গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় সংগঠনটির ২৮১ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম শুক্রবার মধ্যরাতে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক নিউজবাংলাকে জানান, সরকারি কাজে বাধা ও দাঙ্গা করার অভিযোগে এ মামলা করা হয়েছে। মামলার ২১ আসামিকে ঘটনার দিনই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যরা পলাতক।
সহিংস হরতালের পাঁচ দিনের মাথায় শুক্রবার ডাকা বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের গাজীপুরের নেতা-কর্মীরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, সড়কে অবস্থান নিয়ে তাদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে এই সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিপেটার পাশাপাশি রাবার বুলেটও নিক্ষেপ করে।
এতে দুই পক্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার থোয়াই অং প্রু মারমা জানান, জুমার নামাজের পর হেফাজতকর্মীরা চান্দনা ঈদগাহ মাঠে জমায়েত হতে থাকেন। পরে তারা পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গিয়ে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে কমপক্ষে পুলিশের আটজন সদস্য আহত হন।
একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। তখন হেফাজতকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং রাবার বুলেট ছোড়ে। বিক্ষোভকারীরাও তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন।
পুলিশের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হেফাজতের জেলা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন খান বলেন, শুক্রবার দুপুরে কেন্দ্রীয় বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় হেফাজতকর্মী ও হেফাজতপন্থি মুসল্লিরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ঈদগাহ ময়দানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের জন্য অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশ গিয়ে আকস্মিকভাবে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে ও রাবার বুলেট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তার দাবি, এতে অন্তত ১৫ জন হেফাজতকর্মী আহত হয়েছেন।
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে হেফাজতে ইসলাম।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বন্ধু দেশটির সরকার প্রধানের সফরকে কেন্দ্র করে ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা চালান হেফাজতের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। সেদিন পুলিশ গুলি চালালে পাঁচজন নিহত হন। এর প্রতিবাদে ২৮ মার্চ হরতাল ডাকে হেফাজত।
২৬ মার্চ দেশের নানাপ্রান্তে তাণ্ডব চালানো হয়। সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনার পাশাপাশি ভাঙচুর চলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নেও। গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও হয় আক্রমণ।
তবে উল্টো তাদের ওপর হামলা হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ করছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।