ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী তালাকের কাগজ ছাড়া অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে তার সাবেক স্বামীর করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ পিছিয়েছে।
আগামী ২ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীম।
বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়ার তারিখ থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা তা আদালতে জমা দিতে ব্যর্থ হন। এজন্য বিচারক এই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ দিয়েছেন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় নাসির ও তাম্মির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। নাসিরের স্ত্রী পেশায় একজন কেবিন ক্রু। কাজ করেন বিদেশি একটি এয়ারলাইনসে।
সেই বিয়ের পর শুরু হয় বিতর্ক। তামিমা তাকে তালাক না দিয়েই নাসিরকে বিয়ে করেছেন, এমন অভিযোগ করে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে রাকিব হাসান এ মামলা করেন। এরপর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়।
আরজিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাদীর (রাকিব হাসান) সঙ্গে এক নম্বর আসামি তামিমা সুলতানার ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক ৩ লাখ ১ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয় এবং সে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়।
বিয়ের পর থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকেন। এ দম্পতির আট বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। আরজিতে আরও বলা হয়, ‘তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। তিনি সৌদি এয়ারলাইনসে কর্মরত।
‘চাকরির সুবাদে তিনি ২০২০ সালের ১০ মার্চ সৌদি আরব গিয়েছিলেন। মহামারির কারণে জরুরি অবস্থা জারি হলে সেখানেই অবস্থান করেন তিনি। এ সময় ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় রাকিবের সঙ্গে তার যোগাযোগ হতো।’
এজাহারে আরও বলা হয়, ‘চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার সঙ্গে দুই নম্বর আসামির (ক্রিকেটার নাসির) কথিত বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা বাদীর নজরে আসে। বাদী এই ধরনের ছবি দেখে অবাক হন।
‘পরবর্তী সময়ে পত্রিকায় এই বিষয়ে সংবাদ দেখে তিনি ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হন। এ ছাড়া তাদের গায়েহলুদ ও বিয়ে-পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যথাক্রমে ১৭ ও ২০ ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন হয়। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে।’
আরজিতে বলা হয়, ‘তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।’
নাসির বাদীকে ফোন করে জানান যে সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তামিমা তার কাছে আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমা নাসিরকে বিয়ে করেন, যা ধর্মীয় এবং শরিয়া আইন মোতাবেক সম্পূর্ণ অবৈধ।
‘আসামির সঙ্গে তিনি অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা নিকৃষ্টতম ব্যভিচারের পর্যায়ে পড়ে। এ ছাড়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।’
আরজিতে আরও বলা হয়, ‘আসামিদের এরূপ অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তার শিশুকন্যা মারাত্মকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এমন কার্যকলাপে বাদীর চরমভাবে মানহানি হয়েছে যা বাদীর জন্য অপূরণীয় ক্ষতি ও সামাজিকভাবে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন তিনি (রাকিব)।’