হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সংগঠনটির ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম মহাসচিব ও মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদের দুই ছেলেসহ ৫১৫ জনের নামে মামলা হয়েছে।
সিরাজদিখান থানায় মঙ্গলবার রাতে মামলাটি করেন উপপরিদর্শক (এসআই) রিমন হোসাইন।
থানার ওসি (তদন্ত) এসএম কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সরকারি কাজে বাধা, জখম ও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগে বিশেষ আইনে মামলাটি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে মাওলানা আব্দুল হামিদের ছেলে ওবায়দুল্লাহ কাশেমী ও মো. আব্দুল্লাহসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রোববার সংঘর্ষের পর রাতেই অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়। তাদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তবে সংঘর্ষের সময় রাজানগরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়িতে হামলা, আগুন দেয়া ও ভাঙচুরের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।
এ বিষয়ে ওসি কামরুজ্জামান জানান, এসব ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলেই মামলা করা হবে।
হরতালের দিন সকালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কুচিয়ামোড়া ও নিমতলী এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধের চেষ্টা করে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এরপর বড় শিকারপুর, শুলপুর ও রাজানগর এলাকায় হেফাজত নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
এ সময় বেশ কয়েকটি দোকানপাট ও অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেয়া হয় তিনটি মোটরসাইকেলে।
সংঘর্ষে আহত হন সিরাজদিখান থানার ওসি এসএম জালালউদ্দিন ও এসআই সেকেন্দার আলী।
ওসি-তদন্ত কামরুজ্জামান জানান, ওসি জালালউদ্দিনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। মাথায় ৩১টি সেলাই নিয়ে তিনি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সংঘর্ষে আহত হন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম মহাসচিব ও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান মধুপুর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল পীর আল্লামা আব্দুল হামিদ ও হাফেজ মাওলানা বশির আহম্মেদসহ কয়েকজন।
হরতাল সমর্থক হেফাজতের কয়েকজন কর্মী জানান, পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালান।