বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নারায়ণগঞ্জে হেফাজতের সহিংসতা: পুলিশ ও র‍্যাবের ৬ মামলা

  •    
  • ৩০ মার্চ, ২০২১ ১৩:০৪

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি জানান, পুলিশের করা প্রতিটি মামলায় ২০ থেকে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের পাঁচটি, র‌্যাবের একটি সহ ছয়টি মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি রয়েছে দুই হাজারের বেশি।

ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

পুলিশের ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধা, আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সহিংসতার অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ও র‍্যাব মামলাগুলো করে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড মোড় থেকে শিমরাইল এলাকা পর্যন্ত হরতালের নামে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশের করা প্রতিটি মামলায় ২০ থেকে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের পাঁচটি, র‌্যাবের একটিসহ ছয়টি মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি রয়েছে দুই হাজারের বেশি।

হরতালের দিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড মোড় থেকে শিমরাইল মোড় পর্যন্ত রোববার ভোর ৬টা থেকেই অবস্থান নেন হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। আশপাশের কয়েকটি মাদ্রাসা থেকে দলবেঁধে আসে ছাত্ররা। দুপুরের পরে যোগ দেয় তাদের সমর্থকরাও।

সকাল ৭টার দিকে টায়ার ও গাছের গুঁড়ি জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে ঢাকা থেকে কোনো গাড়ি এই পথ দিয়ে কাঁচপুর ব্রিজ পার হয়ে চট্টগ্রাম বা অন্য কোনো গন্তব্যে যেতে পারেনি।

সারা দিনে এই এলাকায় গাড়ি পোড়ানো হয়েছে ৬টি, ভাঙচুর করা হয়েছে ৫০টির বেশি। বাদ যায়নি অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী বহনকারী গাড়ি।

গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে আরও ব্যাপক। ‘সঠিক নিউজ প্রচার হচ্ছে না’ দাবি তুলে সাংবাদিক দেখলেই হামলে পড়েছে হেফাজত কর্মীরা।

পুলিশ ও বিজিবি মিলে পাঁচ শতাধিক গুলি ছুড়েছে। গুলিতে দুইজন আহত হওয়ার তথ্য মিলেছে। তাদের একজনের নাম শাকিল, যাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আরেকজনের নাম জানা যায়নি।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম নিউজবাংলাকে জানান, একের পর এক গাড়িতে আগুন, পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলা করা হয়েছে। পুলিশ দিনব্যাপী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। হরতালের নামে যানবাহন ভাঙচুর ও আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়কে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সোমবার সারা দিন আগুনে পোড়া গাড়িগুলো সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে বিআরটিসির বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও কাভার্ড ভ্যান রয়েছে। আগুনে পোড়া গাড়ির পাশে দাড়িয়ে কাঁদতে দেখা গেছে গাড়ির চালক ও মালিককে।

হেফাজতের তাণ্ডবের সময় গাড়ি থেকে লাফিয়ে প্রাণে বেঁচে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে ট্রাকচালক সুমন মিয়া বলেন, ‘দাড়িওয়ালা, টুপি পরা লোকজন প্রথমে লাঠি দিয়া সামনের গ্লাসটা ভেঙে ফেলে। এরপর গাড়িতে আগুন জ্বালায় দেয়। তখন প্রাণে বাঁচতে গাড়ি থেকে লাফ দিয়া পালাইছি।’

সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা মিজমিজি এলাকার সোহেল মিয়া বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশকে ‘ধর ধর’ বলে ইট মেরেছে হরতালকারীরা। গাড়ি না চলায় যারা এ সড়ক দিয়ে হেঁটে চলাচল করেছে তাদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পূর্বে এ ধরনের হরতাল আমরা দেখিনি। এটা হরতাল নয় সহিংসতা।’

শিমরাইল এলাকার আরেক বাসিন্দা আল আমিন বলেন, ‘শিমরাইল থেকে একটি লাঠিমিছিল বের করে। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখি কয়েকটি গাড়িতে আগুন। মাদানীনগর মাদ্রাসার সামনে ফুটওভার ব্রিজের নিচে বিপুলসংখ্যক হেফাজতের লোকজন অবস্থান নিয়েছিল। এখান থেকেই তাদের সহিংসতা শুরু হয়। এরপর মৌচাক ও সানারপাড় এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।’

মৌচাক এলাকার স্থানীয় এক চায়ের দোকানি বলেন, ‘সারা দিন গুলাগুলি হইছে। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ বিজিবিদের সাইনবোর্ডের দিকে যাইতে দেখলাম। এরপর দেখি হরতালকারী একদল লোক আইসা পেট্রল দিয়া গাড়িতে আগুন জ্বালায় দিল। ওই সময় বিআরটিসি বাসের জানালা দিয়া লাফাইয়া কয়েকজন আহত হইছে। ইসলাম তো এগুলো করতে বলে নাই, তাইলে তারা কেন করে?’

তবে হেফাজতের এ ধরনের সহিংসতার বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানান কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেখানে কী ঘটেছে আমি তা জানি না। কোনো হেফাজতের নেতা নেতৃত্ব দিয়েছে কি না, তাও- বলতে পারব না।’

এ বিভাগের আরো খবর