সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দলটির কর্মী আব্দুল জলিল নিহতের ঘটনায় সাবেক মৎস ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের ছেলে ও চার ভাতিজাকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
নিহত জলিলের চাচা শ্বশুর সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের করা হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে দলটির আরও প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে।
বৃহস্পতিবার রাতের এই মামলায় ইতোমধ্যে চার আসামিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, মামলায় ৭২ জনের নামসহ ৩০/৩৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের ছেলে মিঠু বিশ্বাস, ভাতিজা নান্নু বিশ্বাস, বাবলু বিশ্বাস, লাবু বিশ্বাস ও ঠাণ্ডু বিশ্বাস।
বুধবার বিকেলে এনায়েতপুরের সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভোট গণনা শেষে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন ৩৮ বছর বয়সী আব্দুল জলিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত জলিলকে দলের কর্মী হিসেবে দাবি করেন তার চাচা শ্বশুর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, ‘দলের কমিটিতে জলিলের নাম নেই, তবে তিনি আমাদের কর্মী।’
এসময় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসও এই হত্যাকাণ্ডে দায়ী বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, এনায়েতপুরে সম্মলন কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তাল এখন পুরো এলাকা। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাড়ছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাও।
এ বিষয়ে বেলকুচি-চৌহালী আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ অঞ্চলের রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা ছিল, কিন্তু সেটি ধীরে ধীরে ভালো অবস্থায় যাচ্ছিল। কিন্তু মাঝে মধ্যে ছোট একটা ইউনিয়ন কাউন্সিলে এমন ঘটনা মেনে নেয়া যায়না।’
এসময় নিহত জলিলকে নিজের কর্মী বলেও দাবি করেন সাংসদ আব্দুল মমিন মণ্ডল।
নিহত জলিলের চাচা শ্বশুর জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি যদি দায়ী হই তাহলে কাউন্সিলে উপস্থিত ওই মঞ্চের সকলেই দায়ী। কারণ সেখানে আমি একা নই, বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবাই ছিলেন। আর বাইরে যে সংঘর্ষ হয়েছে তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে সকলেই ক্ষমতার অপব্যহার করার চেষ্টা করছে। আমি কোনোভাবেই এ সব কাজের সঙ্গে নেই।’
নিজেকে গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি করে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তও চান সাবেক এই মন্ত্রী।