রাজশাহীর কাটাখালীতে বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাসচালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলার বেলপুকুর থানার মাহিন্দ্রা বাইপাস এলাকা থেকে শনিবার বেলা দুইটার দিকে আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে কাটাখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর মোহাম্মদ শুক্রবার রাতে হানিফ বাসের অজ্ঞাতপরিচয় চালককে আসামি করে মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়েছে, বাসটির চালক বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে ঢাকা যাবার পথে মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ১৭ জনের প্রাণহানি হয়।
নিহত ব্যক্তিরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী। মাইক্রোবাসে থাকা ১৮ জনের মধ্যে একজনই জীবিত আছেন। পাভেল নামের ওই যুবক রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনায় তিনি হারিয়েছেন তার বাবা মোখলেসুর রহমান ও মা পারভীন বেগমকে।
রাজশাহী মেডিক্যালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস নিউজবাংলাকে জানান, পাভেলের অবস্থা আগের থেকে ভালো। তবে তার মাথার অবস্থা নিশ্চিত হওয়ার জন্য সিটিস্ক্যান করা হয়েছে।
এদিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) একটি টিমের তত্ত্বাবধানে শনিবার সকাল থেকে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তরপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মরদেহ হস্তান্তরপ্রক্রিয়া।
আরএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, ১১ জনের চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। তাদের শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ সংগ্রহের কাজ চলছে। বাকি ছয়জনের মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
কাটাখালীর কাপাশিয়ায় শুক্রবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এ সময় মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে তা আঘাত হানে পাশের একটি লেগুনাতে। সংঘর্ষের পর বাসটি পাশের একটি খাদে পড়ে যায়।
মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাজশাহী মেডিক্যালে নেয়ার পর মৃত্যু হয় আরও ছয়জনের।
তাদের সবার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। তারা রাজশাহীতে বেড়াতে এসেছিলেন।
এই দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন
নিহত ব্যক্তিরা হলেন পীরগঞ্জের দাড়িতপাড়ার মোখলেসুর রহমান ও তার স্ত্রী পারভীন বেগম; চৈত্রকোল রাঙ্গামাটি এলাকার সালাউদ্দিন, তার স্ত্রী সামছুন্নাহার, তাদের আট বছরের ছেলে সাজিদ ও দুই বছরের মেয়ে সাফা; বড় মজিদপুর এলাকার ফুলু মিয়া, তার স্ত্রী নাজমা বেগম, মেয়ে সাবিয়া, সুমাইয়া ও ছেলে ফয়সাল; প্রজাপাড়ার তাজুল করিম ভুট্টু, তার স্ত্রী মুক্তা বেগম, ছেলে ইয়াসিন; বড় রাজারামপুর এলাকার কামরুন্নাহার, দুরা মিঠিপুর এলাকার শহিদুর ইসলাম এবং থানাপাড়ার হানিফ উদ্দিন পচা। পচা মাইক্রোবাসটির চালক ছিলেন।