বগুড়ায় নির্মাণাধীন ভবনের মাটি খুঁড়ে পাওয়া মর্টারশেলকে মূল্যবান কিছু ভেবে সেটি বাড়িতে নিয়ে যান গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বোরহান উদ্দিন। সহযোগীদের নিয়ে কাটতে গেলে সেটি বিস্ফোরিত হয়। তাতেই ঘটে হতাহতের ঘটনা।
গোবিন্দগঞ্জে বোরহানের বাড়িতে বুধবারের বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ বলেন, পরিত্যক্ত মর্টারশেলই বিস্ফোরণের কারণ। এ ঘটনায় নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
আশিক বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। সেখান থেকে পাওয়া তথ্যে গাজীপুরের মাওনা থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে আটক করা হয় খায়রুজ্জামান নামের এক ব্যক্তিকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, বিস্ফোরণের সময় বোরহানের বাড়িতে ছিলেন তিনি।
আশিক জানান, বগুড়ার মোকামতলায় একটি বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। ভবনটির কেয়ারটেকার হলেন মো. হাবিব। কিছুদিন আগে সেখানে মাটি খোঁড়ার সময় মর্টারশেলটি পান শ্রমিকরা, যা হাবিবের কাছে রাখা হয়।
সেটি হাবিবের কাছ থেকে সংগ্রহ করে গেল মঙ্গলবার গোবিন্দগঞ্জের মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামে বোরহানের বাড়িতে নিয়ে রাখেন খায়রুজ্জামান। হাবিবও তাদের সঙ্গে সেখানে যান।
তারা কেউ তখনও জানতেন না বস্তুটি মর্টারশেল। এটির বিষয়ে জানতে এলাকার অহেদুল মিয়াকে তারা ডেকে নেন। অহেদুল প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসপত্র বিক্রি করেন বলে এলাকায় তার পরিচিতি আছে।
অহেদুলই তাদের জানিয়েছিল, বস্তুটি মূল্যবান কিছু হতে পারে।
এরপর বোরহান ও খায়রুজ্জামান ঠিক করেন, এটি তারা খুলে দেখবেন। সে জন্য এলাকার একটি ওয়ার্কশপের কর্মী রানাকে বুধবার বাড়িতে নিয়ে যান বোরহান। সেখানে বসে মর্টারশেলটি তারা কেটে দেখার চেষ্টা করেন। তখনই এটি বিস্ফোরিত হয়।
ঘটনাস্থলেই নিহত হন বোরহান, অহেদুল ও রানা। খায়রুজ্জামান ও হাবিব কিছুটা দূরে থাকায় তারা বেঁচে যান।
আশিক বিল্লাহ বলেন, লাভের আশায় ওই পাঁচজন এই কাজ করতে চেয়েছিলেন। মূল্যবান বস্তু ভেবে এটি বিক্রি করে পাওয়া অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়ার পরিকল্পনাও ছিল তাদের।
আশিক জানান, খায়রুজ্জামানকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া আরও একজন গাইবান্ধা পুলিশের হাতে আটক আছেন। তবে তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তিনি জানাননি। হাবিবের বিষয়েও কিছু নিশ্চিত করেননি তিনি।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, গোবিন্দগঞ্জে জঙ্গি হামলা বা নাশকতার কোনো আগাম তথ্য ছিল না। আর এটির সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতাও নেই।’
‘ওই মর্টারশেল মাটির নিচে ছিল। কোন দেশে তৈরি করেছিল, কেমন ক্ষমতাসম্পন্ন ছিল তা জানার জন্য ফরেনসিক করা হবে।’