চুয়াডাঙ্গায় বালু তোলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
নিহত জাহাঙ্গীর মল্লিকের বাবা রনজিত মল্লিক বুধবার রাত ১২টার দিকে সদর থানায় ছয়ঘরিয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা আবদুল মোমিন, জিসান, লিমনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান নিউজবাংলাকে জানান, আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। জাহাঙ্গীরের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
জাহাঙ্গীর ছিলেন উপজেলার নুরুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা ও তিতুদহ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বালুর ব্যবসা ছিল।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার দুপুর ১টার দিকে সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামে ট্রাক্টরে করে বালু আনতে যান জাহাঙ্গীরসহ আরও কয়েকজন। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। অন্যরা পালাতে পারলেও জাহাঙ্গীর ধরা পড়েন। তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় জাহাঙ্গীরের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নিউজবাংলাকে বলেন, সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শুকুর আলীর সঙ্গে ছয়ঘরিয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিনের বিরোধ রয়েছে। জাহাঙ্গীর শুকুর আলীর বালু তদারকি করতেন।
সম্প্রতি ছয়ঘরিয়া গ্রামের তিস্তা নদী থেকে বালু তুলে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের খামারের পাশেই একটি স্থানে রাখেন শুকুর আলী। পূর্ববিরোধের জেরে সেই বালু দখল নিয়ে বিক্রি বন্ধ করে দেন যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিন।
জাহাঙ্গীরের ভাই ইকবাল হোসেন জানান, বালু তোলা ও চাঁদা দাবি নিয়ে একটি পক্ষের লোকজনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরদের বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই জাহাঙ্গীরকে কোদাল, বেলচা ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শুকুর আলী বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আমার বালুর ব্যবসা দেখাশোনা করত। দুপুরে সে বালু উত্তোলনের জায়গায় গেলে তার ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় অংশ নেন রাজনৈতিক দলের একটি অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এর আগে তোলা বালু বিক্রি করতে গেলে চাঁদা দাবি করা হয়। এ ঘটনায় আমি মামলাও করি।’
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান বলেন, জাহাঙ্গীরের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার বাম হাত ভাঙা ছিল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়।